নেসকোর বিদ্যুৎ বিলের অনিয়ম বন্ধের দাবীতে নগরীতে মানববন্ধন
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২০ ২০:৩১; আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২০ ২০:৫৭
-2020-10-27-14-29-52.jpg)
‘নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী’র (নেসকো) অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রতিকার চেয়ে নগরীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় নেসকোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।
এই সময় বক্তারা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানীর অভিযোগ এনে তার প্রতিকার দাবি করেন।
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিতের দাবি করে কর্মসূচীতে আগামী বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিদ্যুৎ ও জালানী মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কোম্পানীতে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকে জবাবদিহিতা ছাড়াই চলছে নেসকোর কার্যক্রম। আর বিদ্যুৎ বিলের ভোগান্তি সবচেয়ে অসহনীয়। ঘরে বসেই ইচ্ছেমত বিল তৈরীর কারণে নাজেহাল হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী। কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রমাণিক দেবু, ডা. আবদুল মান্নান, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক হারুনার রশিদ, ন্যাপ নেতা মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, বিএফইউজে সহ-সভাপতি মামুন-অর-রশিদ, আইনজীবী নেতা এন্তাজুল হক বাবু, বাপা, রাজশাহীর সহসভাপতি সেলিনা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা হাকিম আতাউর রহমান, আলতাব হোসেন, আবদুল মতিনম বজলুর রহমান, সেভ দি ন্যাচার চেয়ারম্যান মিজানুর রজমান, উন্নয়ন কর্মী সুব্রত পাল, ওয়েব সভাপতি আঞ্জুমান আরা লিপি, শিক্ষক আলাউদ্দিন আল আজাদ, পবা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া হাসান, কেএম যুবায়েদ হোসেন জিতু, জাহিদ হাসান ও মো. তারেক প্রমুখ।
মহামারী পরিস্থিতিতে সেবার মানের আরো অবনতি হয়েছে দাবি করে বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনো নিরবিচ্ছিন্ন না হলেও নেসকোর ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের ইশারায় করোনাকালে নেসকোর ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে। মিটার রিডিং না দেখে অফিস থেকে মনগড়া বিদ্যুতের বিল করার জন্য হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এতে কারো কারো ১০ গুন পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল দেখানো হয়েছে।
প্রয়োজনে নেসকোর কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়ে বক্তারা বলেন, প্রতিনিয়ত ভৌতিক বিলের ঘটনা ঘটলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। গ্রাহকরা একের পর অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিল করা হয়েছে কয়েকগুন। এরই মধ্যে ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা গ্রহকসেবায় আরো হয়রানীর মুখে পড়বে হলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
মনগড়াভাবে বিদ্যুৎ বিল তৈরীর অভিযোগ এনে বক্তারা বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রাহকদের বিদ্যুতের বিল বেশি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল দেয়া হলেও মিটার রিডিং দেখা হচ্ছে না। অফিসে বসে মনগড়াভাবে তৈরি করা বিদ্যুৎ বিল গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
নেসকোর এমন সেবা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত করেছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পরিসেবা পৌঁছানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন সরকার। গ্রামেও বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছেন। তবে উত্তরবঙ্গে নেসকো যেভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মে পরিণত হয়ে বিদ্যুৎখাত নিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে এসে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের সুদুর প্রসারী উদ্যাগ ম্লান করে দিচ্ছে নেসকো।
অনিয়ম অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন অবিলম্বে নেসকোর গ্রাহক সেবা বৃদ্ধি, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিসেবা নিশ্চিত ও ভুতুড়ে বিল বন্ধ করতে হবে।
সেবার পরিবর্তে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান। তিনি বলেন, নেসকো গ্রাহকদের চরম ক্ষতি করতে। ভুতুড়ে বিল তৈরি করে গ্রাহকের টাকা লুট করছে। মানুষের সেবার পরিবর্তে চরম হয়রানী করছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। তাই এ অবস্থা থেকে ফিরে গ্রাহক সেবা নিশ্চিতের দাবি ও ভুতুড়ে বিল বন্ধের দাবি জানান তিনি।
মন্ত্রণালয়ে যে স্মারকলিপি দেয়া হবে তার অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছানো হবে জানিয়ে মানববন্ধনে বলা হয়, ইতিমধ্যে স্মার্ট প্রি পেইড মিটার লাগানো শুরু হয়েছে। তবে ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবস্থা না করে গ্রাহকের ওপর যেন চাপিয়ে দেওয়া না হয় সে নেসকো কর্তৃপক্ষের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
- এসএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: