একরাতের ব্যবধানে নাটোরে ৫০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম!

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:১৭; আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:২৮

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণার খবরে নাটোরের বাজারগুলোতে আবারও একরাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। যার বর্তমান বাজার ২০০ টাকা ছুঁইছুঁই হয়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) শহরের বিভিন্ন বাজারগুলো প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও একদিনের ব্যবধানে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, নতুন পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও ভারতের পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও সাধারণ ক্রেতারা।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে নাটোর শহরের স্টেশন বাজার, নিচাবাজার, মাদরাসা মোড় এলাকার সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। অন্যদিকে নতুন পেঁয়াজ বাজারে দেখা গেলও দাম ছিল চড়া। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ বন্ধের ঘোষণার পর থেকেই দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আড়তে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি থাকলেও দাম বেশি। আড়তে দাম বাড়লে খুচরা ব্যবসায়ীদের কিছু করার থাকে না। বেশি দামে কিনে, বেশিতে বিক্রি করতে হয় বলে জানান।

নিচাবাজারে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সৈকত হোসেন বলেন, কয়েকদিন ধরে দেশি পেঁয়াজের দাম হুহু করে বাড়তে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। হঠাৎ ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণার পর পরই হুহু করে দাম বেড়ে চলেছে। গতকাল দেশি পুরানো পেঁয়াজ ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। সামনে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা পার হতে পারে বলে এ খুচরা বিক্রেতা জানান।

স্টেশন বাজারে খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ বন্ধের খবরে দাম বেড়েছে। কোনো পণ্যের দাম ঘোষণা হলেই আড়তে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এর আগে খুচরা পর্যায়ে ৯০-১০০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। বেশি দামে কিনে, বেশিতেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

আলমগীর হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, গত তিনদিন আগেও ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনলাম। আজ বাজারে এসে শুনলাম পেঁয়াজের দাম ১৯০ টাকা। সামান্য মসলা পণ্য যদি ২০০ টাকা কেজি কিনতে হয়, তাহলে অন্যান্য জিনিসপত্র কি দিয়ে কিনবো। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা কেউ চিন্তা করে না। সরকারের উচিত পেঁয়াজসহ এসব পণ্যে দাম বেধে দেওয়া। যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় থাকে।

রিকশাচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, সবজি কিনতে এসে শুনলাম ২০০ টাকা কেজি পেঁয়াজ। গত দুদিন আগে ১৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা মতো দাম বাড়িয়ে দেয়, দেখার মতো কেউ নেই। আমরা চাল কিনবো না, পেঁয়াজ কিনবো? গরীব মানুষের কথা কেউ ভাবে না, সবাই যার যার পকেট ভরা নিয়ে ব্যস্ত।

বাজার করতে আসা সুফিয়া বেগম নামে এক নারী বলেন, সবজি-মাছ কেনার পর পেঁয়াজ কিনতে এসে শুনি ১৯০ টাকা কেজি দাম। আগের দামে টাকা রেখেছি আধা কেজি পেঁয়াজ নিবো। এখন এক পোয়া নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। আমাদের দেশে কোনো পণ্যের দাম ঘোষণার আগেই ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধি করে দেয়। সাধারণ মানুষের পক্ষে ২০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কেনা সম্ভব নয়। সরকারের উচিৎ বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান তানভীর বলেন, পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর বাজার মনিটরিং শুরু করেছে। কোনো ব্যবসায়ী আগের দামে কেনা পেঁয়াজ, বর্তমানে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার তদারকি করছে বলে জানান তিনি।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top