বাঘার জরাজীর্ণ থানা, ঝুঁকি নিয়ে পুলিশের কার্যক্রম

মো. লালন উদ্দীন, বাঘা। | প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০২:৩৭; আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৩

জরাজীর্ণ বাঘা থানা।

স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, কংক্রিট আর পলেস্তারা খসে পড়ছে। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পড়ে পানি। ছাদের সিলিংয়ে সেই পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কালো ছোপ ছোপ দাগ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ভবনগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর সেই ভবনে বাস করছে কতিপয় পুলিশ সদস্য।

বাঘা থানা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ভবন জরাজীর্ণ হলে নিয়মানুযায়ী সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা দরকার। কিন্তু এখানে সেটি হয়নি। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কার মধ্যেই উক্ত ভবনে বসবাস করছে কতিপয় পুলিশ সদস্য। তাঁরা বলছেন, ভবন প্রতিষ্ঠার সময় কাল ৩৮ বছর। এ দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় বেড়েছে জনবল, কিন্তু সে অনুযায়ী বাড়েনি অবকাঠামোগত সুবিধা।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর জেলার বৃহত্তর চারঘাট উপজেলা ভেঙ্গে ৩৮ বছর পূর্বে বাঘা থানা প্রতিষ্ঠিত হয় । ঐ সময় থানা ভবন সহ পুলিশদের বসবাসের জন্য তিনটি ভবন নির্মান করা হয়। এর একটিতে থাকেন থানার অফিসার ইনচার্জ এবং অপর দু’টিতে পৃথক চারটি ইউনিটে এক সময় উপ-পরিদর্শকরা থাকলেও এখন বাস করেন সাধারণ পুলিশ। এর একটিই কারণ ভবন গুলো এখন বসবাসের অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভবনগুলোর বাইরে ও ভেতরের দেয়ালের অনেক স্থানে ফাটল ধরেছে। সেই সাথে দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। ছাদের পলেস্তারা খসে লোহার রড বেরিয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো ভবনের পলেস্তারা ও বৃষ্টির পানি ঠেকাতে পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে। এ দিক থেকে পর্যায়ক্রমে অফিসার ইনচার্জ যারা আসেন, তারা মিস্ত্রী দিয়ে তাঁদের রুম গুলো সংস্কার করে নিলেও অন্য দুটি ভবনের চারটি ইউনিট (শাখা) বসবাসের জন্য মারাত্নক ঝুকি বহন করছে।

এদিকে এসব ঘরে যারা বসবাস করছেন তাদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার সর্তে দু’জন সাধারণ পুলিশ বলেন, এক সময় এসব ঘরে দারাগারা থাকতেন। কিন্তু রুমের বেহাল দশা হওয়ার কারনে এখানে আর কোন অফিসার থাকেন না। তারা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন থানার বাইরে। তাদের বক্তব্য , এই থানার ভেতরে অনেক ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এখানে সরকারি ভাবে দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় তলা ভবন নির্মান করলে থানার সকল পুলিশ থানা চত্বরে থাকবে।এতে করে কাজের গতিও বৃদ্ধি পাবে।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘জরাজীর্ণ ভবনের বেহাল দশা এবং ঝুঁকির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এটি অনেক পুরাতন একটি থানা হওয়া সত্বেও এখানে অবকাঠামো কোন উন্নয়ন হয়নি। থানার ভেতরে একটি রুমে স্কুল শিক্ষার্থীদের ন্যায় গাদা-গাদি করে বসতে হয় উপ-এবং সহকারি উপ-পুলিশ পরিদর্শকদের। এতে করে কাজের মারাত্নক ব্যাঘাত ঘটে।

শুধু তাই নয়, এ থানায় প্রবেশের জন্যে যে রাস্তাটি রয়েছে তার পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মহিলা-কলেজ)এর পুকুর ঘেষে সরকারি জমি দখল করে প্রাচীর নির্মান করায় মুখো-মুখি দুটি গাড়ি আসা যাওয়া করতে পারেনা । এ বিষয়ে আমি কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রাচীর সরিয়ে নিতে বলেছি। কিন্তু তারা সরকারি বরাদ্দ না পেলে এটি এই মুহুর্তে সরাতে পারবেনা বলে জানিয়েছেন ।

মোঃ লালন উদ্দীন

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top