বয়সভিত্তিক সাফজয়ী রাজিয়া মারা গেছেন

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৮:৪৬; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৩২

ছবি: সংগৃহীত

সন্তান প্রসবকালীন জটিলতায় মারা গেছেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার রাজিয়া খাতুন। বুধবার রাত ১০টায় সন্তান জন্মদানের পর শারীরিক জটিলতা শুরু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সাবিনা খাতুন-কৃষ্ণা রানী সরকাদের সঙ্গে জাতীয় দলের আবাসিক ক্যাম্পে নিয়মিত ছিলেন রাজিয়া খাতুন। ২০১৮ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে জাতীয় দলের হয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপও খেলেছেন রাইট মিডফিল্ড পজিশনে খেলেন রাজিয়া।

রাজিয়া সাতক্ষীরার মেয়ে হলেও টাঙ্গাইল জেলা দলে কয়েক বছর খেলেছেন। টাঙ্গাইল জেলা দলের কোচ গোলাম রায়হান বাপন মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমি যতদূর জানতে পেরেছি বাড়িতে নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান জন্ম দিয়েছে রাজিয়া। কিন্তু তার পর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা জানিয়েছেন।’

গোলম রায়হান বাপনের সহোদর গোলাম রাব্বানী ছোটনের অধীনে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দল ও জাতীয় দলে খেলেছেন রাজিয়া। জাতীয় দল ছেড়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নেওয়া এ কোচ সাবেক শিষ্য সম্পর্কে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নারী ফুটবলারদের নিয়ে জাতীয় দলের আবাসিক ক্যাম্প করার সূচনাতে সাবিনা-কৃষ্ণাদের সঙ্গী ছিলেন রাজিয়া। ২০১৫ সালে এএফসির বয়সভিত্তিক কার্যক্রম, ২০১৬ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী বাছাই ও চূড়ান্ত পর্বের দলেও সে ছিল। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ও ২০১৯ সালে সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলেছে সাবেক এ রাইট মিডিফিল্ডার।’

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর ২০১৯ সালে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। পরে ঘরোয়া কার্যক্রমে নিয়মিত ছিলেন রাজিয়া।

বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে নিয়মিত খেলেছিলেন তিনি। তার ঝুলিতে আছে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফের শিরোপা। তবে রাজিয়া খাতুনের খেলা হয়নি জাতীয় দলের। বাদ পড়েন বাফুফে ক্যাম্প থেকে।

নারী ফুটবলের পরিচিত সেই মুখ আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে পরপারে পাড়ি জমান রাজিয়া। দেশের ফুটবলাঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলে ২৩ বছর।

এ সময় চিকিৎসকরা জানান প্রসবের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় তার। সেই রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয় রাজিয়ার। জাতীয় নারী ফুটবল দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলার শোক প্রকাশ করেছেন।

সাতক্ষীরার ২০০১ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন রাজিয়া। তিনি বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উত্থানের শুরুর দিকের একজন। রাজিয়া ২০১৩ ও ১৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক (সেন্ট্রাল ও দক্ষিণ এশিয়া) চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন।

২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত হয় অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ফাইনালে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করে বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই দলের সদস্য ছিলেন রাজিয়া।

এর আগে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল রাউন্ডে খেলেন রাজিয়া। সাফজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আর্থিক পুরস্কারও পান তিনি।

২০১৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের ক্যাম্পে ছিলেন রাজিয়া। পারফরম্যান্সে অবনতি হওয়ায় বাদ পড়লেও খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। গত দুই লিগে এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কাচারিপাড়ায় খেলেছিলেন রাজিয়া। তার অকাল মুত্যৃতে শোক জানিয়েছে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হোসেন পাপন ও বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top