ক্রাইস্টচার্চে এবারও ‘গুলির শব্দ’ শুনেছেন তামিম

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২ মার্চ ২০২১ ০৩:৪৯; আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২২

তামিম ইকবাল

ক্রাইস্টচার্চ এমনিতেই আতঙ্কের শহর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের জন্য। ২০১৯ সালে এই শহরেই অল্পের জন্য বন্দুকধারীর হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকাররা। তবে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন সেই বিভীষিকা।

বাংলাদেশ দল আবারও যখন ক্রাইস্টচার্চে, স্বাভাবিকভাবেই ভয়াল সেই স্মৃতি উঁকি দেওয়ার কথা ক্রিকেটারদের মনে। এর মধ্যেই কিনা সেদিন হোটেল রুমে তামিম ইকবালের কানে বাইরে থেকে ভেসে এল গোলাগুলির শব্দ! ভয়ে শিউরে ওঠেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। আজ প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সে কথাই বলেছেন তামিম।

তবে শব্দটা আসলে গোলাগুলির ছিল না। ক্রাইস্টচার্চের হলিডে ইন ডাবল ট্রি হোটেলে নিজের রুমে বসে তামিম মুঠোফোনে বলছিলেন, ‘হোটেল থেকেই দুই দিন আগে হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেলাম। আমি তো ভয়েই শেষ! পরে দেখলাম আতশবাজি ফোটানো হচ্ছে। এখানে কোথাও কনসার্ট হচ্ছিল। সেটা উপলক্ষে আতশবাজি। কিছুক্ষণের জন্য ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম আসলে।’

হঠাৎ পাওয়া ওই ভয় ছাড়া রুমবন্দী কোয়ারেন্টিন একেবারে খারাপ কাটছে না তামিমদের। ‘যতটা কঠিন সময় যাবে ভেবেছিলাম, অতটা যাচ্ছে না। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রুমে আমাদের সাইকেল দেওয়া হয়েছে। ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজের জন্য দেশ থেকেও অনেক কিছু নিয়ে আসা হয়েছে। সেগুলো দিয়ে টুকটাক ফিটনেসের কাজ করছি’—বলেছেন বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার।

ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডে খেলতে যাওয়ার আগপর্যন্ত ক্রাইস্টচার্চের এই হোটেলেই থাকবে বাংলাদেশ দল। তার আগে ৪ মার্চ থেকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে শুরু হবে অনুশীলন। তামিম জানালেন, ‘কাল আমাদের কোভিড পরীক্ষা করানো হবে। সব ঠিক থাকলে আমাদের হোটেলে জিম করতে দেবে। ৪ তারিখ থেকে গ্রুপ বেঁধে বেঁধে অনুশীলন হবে।’

তবে সেই অনুশীলনও কোয়ারেন্টিন থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেবে না ক্রিকেটারদের, ‘আমরা অনুশীলনে যাব ঠিকই, কিন্তু হোটেলে এসে আবার একই নিয়মকানুন মানতে হবে। আইসোলেশনের মধ্যেই থাকতে হবে। ঘোরাফেরা করা যাবে না।’

ঘরবন্দী এই সময়ে পাশের রুমেও যাওয়ার উপায় নেই কারও। প্রয়োজনে ফোনেই হয় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ। রুমের সামনে খাবার দিয়ে হোটেলের লোক দরজায় টোকা দিয়ে চলে যান। পরে মাস্ক পরে দরজা খুলে সে খাবার রুমে ঢোকান ক্রিকেটারেরা।
তামিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল ক্রাইস্টচার্চে আছে প্রায় এক সপ্তাহ হলো। অথচ এই কদিনে সতীর্থদের মধ্যে আগের মতো আড্ডা নেই, দল বেঁধে রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া নেই। কোয়ারেন্টিনের শেকলে বন্দী বলেই এখন সেসব সম্ভব নয়, নইলে তামিমের উদ্যোগেই তো হয় এসব!

এবার যেহেতু তিনি অধিনায়কও, সুযোগ পেলে তামিম হয়তো সবাইকে একসঙ্গে রাখার কাজগুলো আরও বেশি করেই করবেন। তবে তামিম এই জায়গাতেও চান একজন অলিখিত সহকারী, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি এখন ভিন্ন ভূমিকায়। আমি দলে আগে যে ভূমিকাটা রাখতাম, এখন যদি অন্য কেউ সেটা পালন করে, তাহলে আমার নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটা আরও সহজ হয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস আমাদের দলে সে রকম অনেকেই আছে।’

যখন অধিনায়ক ছিলেন না, তখন তামিমের ভাবনার জগৎটাও ছিল ছোট। নিজের খেলার বাইরে দলকে চাঙা রাখতে নিজ উদ্যোগে অনেক কিছুই করতেন। এখন হয়তো চাইলেও সেসব সম্ভব নয়। অবশ্য শেষ কথাটা তামিমই বললেন, ‘মানুষের চরিত্র তো আর এত সহজে বদলায় না। সময়-সুযোগ পেলে আমি নিশ্চয়ই সেসবও করব।’

 

 

সূত্র- প্রথম আলো

 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top