শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

নতুন শিক্ষাক্রমের পুরোপুরি সুফল পেতে দশ বছর সময় লাগতে পারে

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৭; আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ০২:৪৯

ছবি- শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম যদি পুরোপুরি ও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে আগামী পাঁচ বছর পর থেকে একটু পরিবর্তন দেখতে শুরু করব। ১০ বছর পর বড় পরিবর্তন দেখতে পাব।

আজ সোমরার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে ব্রাকের আয়োজনে Exploring Attitude towards Gender Norms among the Youth Population in Bangladesh শীর্ষক এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন রাতারাতি হয় না, সময় লাগে।

কিন্তু যদি খুব ভালোভাবে করতে পারি তাহলে আগামী বছর থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে শিখতে শুরু করবে, তাদের মধ্য দিয়ে তাদের পরিবারে চিন্তাগুলো চলে যাবে, চর্চাগুলো চলে যাবে। তার মধ্য দিয়ে আমরা একটা বড় পরিবর্তন আশা করতে পারি। '

কন্যা শিশুদের অধিকার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নারীর অবস্থা, অবস্থান পড়াশোনা, তার অধিকার, পোশাকের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার এবং ধর্ষণ নিয়েও কথা আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাজ মনে করবে ধর্ষণ হলে ধর্ষিতার সম্ভ্রমহানী ঘটে, ততক্ষণ পর্যন্ত ধর্ষণ চলতে থাকবে। এটা একটা হাতিয়ার হিসেবে কেউ না কেউ ব্যবহার করবে। যুদ্ধে ব্যবহার করবে, স্বাভাবিক জায়গায় ব্যবহার করবে, প্রেমে প্রত্যাক্ষাত হয়ে ব্যবহার করবে, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবে। '

দীপু মনি বলেন, 'কুকুর কামড় দিলে সম্ভ্রম যায় না, কিন্তু ধর্ষিত হলে সম্ভ্রম যায়। নিশ্চয় সম্ভ্রম নারীর কোনো বিশেষ অঙ্গে থাকে না। অতএব ধর্ষণের সঙ্গে সম্ভ্রমের কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, আমি কখনোই মনে করি না তাদের সম্ভ্রমহানী হয়েছিল। তাদের একদল পশু নির্যাতন করেছিল। তাদের যদি কুকুরে কামড় দিত তাহলে নিশ্চয় আমরা বলতাম না সম্ভ্রমহানী হয়েছিল। তাদের পিতা ও সমাজ তাদের পরিত্যাগ করেছিল। '

একজন পিতা মুজিব তাদের মেয়ের মতো করে টেনে নিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সমাজে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছিলেন। এখনো প্রতিদিন যেসব ঘটনা ঘটছে তা ঘটতেই থাকবে যতক্ষণ আমরা মনে করব, ধর্ষিত হলে তার সম্ভ্রম চলে যায়। কোনো নারীর সারাটি জীবন ধ্বংস করার জন্য একটা কিছু করলাম। সমাজও তাই মনে করছে, মেয়েটিও তাই মনে করছে। এই জায়গা থেকে আমাদের বেরুতে হবে। '

এ সময় নারীর অধিকার, মানুষের অধিকার, প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের শরীরে অসুস্থতা দেখা দিলে দৌড়ে চিকিৎসকের কাছে যাই। কিন্তু মানসিক সমস্যা আছে, তোলপাড় চলছে। কিন্তু কেউ স্বীকারই করবেন না। যারা জানেন তারা স্বীকার করলেও রেমিডি চাইবার ব্যবস্থা করবে না। নারীরা, মাঝ বয়সী মানুষেরা, সমাজের বড় একটা অংশ মানসিক বৈকল্যে ভোগেন। কিন্তু এটাকে কেউ স্বীকার করতে রাজি নন। '

দীপু মনি বলেন, 'আমার বাচ্চা পড়তে পারছে না, ডিভাইসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাচ্চাটিকে একজন মানসিক চিকিৎসকের কাছে, থ্যারাপিস্টের কাছে নিয়ে যাচ্ছি না কেন? তাহলে আমার মান-ইজ্জত থাকবে না লোকে বলবে মানসিক চিকিৎসকের কাছে গেছ কোন, থ্যারাপিস্টের কাছে গেছ কেন? আমার ছেলে, আমার মেয়ে কী পাগল, এরকম নানান কথা। আমরা মানসিক দোটানার মধ্যে থাকি কিন্তু বাস্তবতাকে স্বীকার করতে চাই না।

 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top