সংঘর্ষের ঘটনায়

রাবির ৬০ শিক্ষার্থী গুলির পিলেটে ক্ষতবিক্ষত, বের করা নিয়ে শঙ্কা

রাবি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪১; আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫৫

সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছবি: সংগৃহীত।

'সংঘর্ষের দিন ২৮টি গুলির পিলেট আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্ধ হয়। কিন্তু ঘটনার পাঁচ দিনেও শরীর থেকে পিলেটগুলো বের করেনি চিকিৎসক। তাহলে কি এই পিলেটগুলো শরীরে নিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে? এগুলো কি অপসারণ করার কোনো উপায় নেই? এভাবেই কি মেটালিক নিয়ে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে?

এভাবেই আক্ষেপ জানিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী এস. তানভির (ছদ্মনাম)।

গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮টি গুলির পিলেট তার শরীরে বিদ্ধ হয়।

শুধু তানভির নয় এমন ৬০ জনের অধিক শিক্ষার্থীর শরীরে গুলির পিলেট বিদ্ধে ক্ষতবিক্ষত হয়, বের করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সবাইকে। অনেকের শরীরে শতাধিক গুলির পিলেটও ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে অধিকাংশ পিলেট শরীর থেকে বের করা যাবে না বলছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, যেসব গুলির পিলেট শরীরের গভীরে গিয়েছে সেগুলো বের করা যাবে না। তাছাড়া একেক জন শিক্ষার্থীর শরীরে ৩০ টার অধিক গুলির পিলেট বিদ্ধ হয়ে আছে। একজনের শরীরে এত জায়গায় কাটাছেঁড়া করলে দেহের কোষের ক্ষতি হবে। তবে যে পিলেটগুলো বের করা সম্ভব, সেগুলো আমরা বের করে দিচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শতাধিক গুলির ‘পিলেট’ নিয়ে এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন মশিউর রহমান ওরফে মিহাদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শরীরে পিলেট ঢুকে তার পাচকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে গেছে।

গত রোববার চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করা হয় মিহাদের। তার এক্স-রে ফিল্মে ১০৭টির বেশি পিলেট পাওয়া গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওই শিক্ষার্থীর অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

মশিউর রহমান বলেন, আমাদের উপর কেন পেলেট গানের গুলি ছোড়া হলো? শরীরটা ঝাঝরা হয়ে গেছে। ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে কীভাবে মায়ের সামনে যাবো। পুলিশ কীভাবে আমাদের ওপর হামলার অনুমতি পায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ড. তবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের শরীরের পিলেটগুলো নির্দিষ্ট একটা সময়ের পর ফোলা কমে গেলে সার্জারির মাধ্যমে বের করা যাবে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ. এম. শামীম আহাম্মদ বলেন, শরীরের পিলেট থাকলে সমস্যা হবে না। কিন্তু পিলেট অপারেশন করে বের করতে গেলে আরো বেশি সমস্যা হবে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top