রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’

রাবি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১২; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:০৮

- ছবি - ইন্টারনেট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হল ও মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চর্মরোগ ‘স্ক্যাবিস’। ছোঁয়াচে এই রোগে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন।

রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিকে মেডিকেল সেন্টারে সঠিক চিকিৎসাসেবা এবং ওষুধ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে সকাল থেকেই আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের ভিড় জমেছে। কেউ সিরিয়ালে ডাক্তার দেখানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছেন, কেউবা ওষুধ পেতে অপেক্ষা করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “কয়েকদিন ধরেই শরীরে ব্যাপক চুলকাচ্ছে, লাল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের রুমেও কয়েকজনের একই সমস্যা।”

আরেক শিক্ষার্থী জানান, “আমার হাতের আঙুলে, পেটে এবং শরীরের কিছু স্পর্শকাতর জায়গায় চুলকানোর ফলে ফুলে গেছে। এখন ডাক্তার দেখালাম। অনেকদিন পর ভালো চিকিৎসাসেবা পেলাম, একটি ছাড়া সবগুলো ওষুধই পেয়েছি।”

এ বিষয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন  বলেন, “শত শত চর্মরোগের মধ্যে সবচেয়ে ছোঁয়াচে রোগটির নাম স্ক্যাবিস। গত কয়েকদিন ধরেই একের পর এক এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা এসে হাজির। বিভিন্ন হল, মেসে বসবাসরত ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই ছোঁয়াচে রোগ।”

রোগটির বর্ণনা দিতে গিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, “আঙুলের ফাঁকে, কব্জির সামনে, বগলে, নাভিতে ছোট ছোট ফুসকুড়ি নিয়ে শুরু হয়ে যায় এই রোগ। বিশেষ করে রাতের বেলায় চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়। ক্লোজ কন্টাক্টে যারা থাকেন, তাদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে যাওয়ার মাত্রা অনেক বেশি।”

মেডিকেল সেন্টারে রোগটির ওষুধ থাকার বিষয়ে ডা. মাশিহুল আলম বলেন, “অবাক করা বিষয় হলো, মেডিকেল সেন্টারে স্ক্যাবিস রোগের ওষুধ ছিল না। পরে প্রধান চিকিৎসক ডা. মাফরুহা সিদ্দিকা লীপিকে বিষয়টি জানালে তিনি জরুরিভিত্তিতে ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। এখন থেকে রাবি চিকিৎসাকেন্দ্রেই স্ক্যাবিসের চিকিৎসাসহ সব ওষুধ পাবেন। এজন্য প্রধান চিকিৎসককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “হলে বা মেসে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে এই ছোঁয়াচে রোগ বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের উচিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও সচেতন থাকা। এছাড়া একে অন্যের পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার না করা।”

শিক্ষার্থীরা ঠিকঠাক সেবা পাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে এই প্রধান চিকিৎসক জানান, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সবাইকে সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধ সরবরাহ করতে। যদিও আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে, আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। কিছু ওষুধ পেয়েছি, আরও দরকার।”



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top