ভিসিকে কখনো প্রশংসায় ভাসান, কখনো পাকিস্তানে পাঠান রাবি ছাত্রদল সভাপতি

নুর আলম নেহাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: | প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫ ০০:১০; আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৫:৫৪

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এবার রাবি ক্যাম্পাস ছেড়ে ভিসি ড. সালেহ্ হাসান নকীব ও রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলামকে পাকিস্তানে যেতে বললেন শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী।

তবে মাঝেমধ্যেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আলোচনা সভায় রাবি উপাচার্যকে নিয়ে প্রশংসায় ভাসাতেও দেখা গেছে তাকে।

গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সের মিলনায়তনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আগস্ট বিপ্লব’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এক আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানের শুরুতে তিনি রাবি ভিসিকে উদেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণ যার পদক্ষেপ, কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে থাকে আমাদের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব স্যার।

এদিকে আজ (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, 'ফকির-নকীব পাকিস্তান যাও, রাবি ছাড়ো, রাকসু বাঁচাও!' এই স্ট্যাটাসকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনাস-মালোচনার জন্ম দিয়েছে।

জাহিদ হাসান জোহা নামের একজন লিখেছেন, কথায় কথায় যাকে-তাকে দেশের বাইরে পাঠানো ফ্যাদিবাদী আচরণ। সালমান বিন আব্দুর রাজ্জাক লিখেছেন, ৫ আগস্টের পরে আপনাদের রাজনীতি হাসিনার মতোই হচ্ছে জনগণের পারসেপশন বুঝতে আপনারা ব্যর্থ হচ্ছেন দিন দিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ও রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পাকিস্তানে পাঠানোর স্লোগানের বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমরা অতীতে দেখতাম ভারতীয় হাইকমিশন আগে সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করতো, ইনিও (ভিসি) দেখি পাকিস্তান হাইকমিশনার এলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান। আমরা মনে করি, তারা একটি রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে এটা প্রমাণিতও হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে কীভাবে ষড়যন্ত্র করা যায়, কীভাবে কাকে বাদ দেওয়া যায়, রাকসুতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কোনো আগ্রহ তাদের নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী, যারা রাকসু ফি প্রদান করেছে, এরকম হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে ভোটদানে সুযোগ না দেওয়া মানে আমরা মনে করি গণতন্ত্রের উপর আঘাত। একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই নবীন শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। আর বিশেষ গোষ্ঠী কারা তা তো আপনারা জানেন। তাদের এ সকল কার্যকলাপের কারণেই মূলত রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে আমি ফেসবুকে উক্ত কথাটি লিখেছি।

রাকসু নির্বাচনের আলাদা কমিশনা থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার ভিসিকেই দোষারোপ করছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একটি সংগঠনের কর্মী অন্যায় করলে যেমন নেতাকে দায়ভার নিতে হয়, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ভিসি নকীব স্যারকেও দায়ভার নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কেউ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, অন্যায়ের শিকার না হয়, এগুলো নিশ্চিত করা তো তাঁর দায়িত্ব।

"তিনি সকল কিছু ভঙ্গ করেছেন। আমরা তো তাকেই প্রশ্ন করব। রাকসুর এই পুনর্বিন্যস্ত ভোটের ডেটটা প্রমাণ করে তারা পাকিস্তানপন্থি। তারা কি জানতো না এ দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা আছে। এমনিতেই তো রাকসু নির্বাচন নিয়ে কারও আগ্রহ নেই। আমি দেখেছি একটি বিশেষ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।"



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top