আবারও পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তপ্ত রাবি ক্যাম্পাস

রাবি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৫২; আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৩৩

- ছবি - ইন্টারনেট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন করে কিছু শিক্ষার্থী। পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে গতকাল রাত থেকে আমরণ অনশনে নামে ৭ জন শিক্ষার্থী।

এতে অসুস্থ হয় দুজন। প্রশাসনের নির্বিকার অবস্থান মেনে নিতে না পেরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ আরও অনেককে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা তাদের সাথে হাতাহাতিতে জড়ান।

শনিবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে, দুপুরে উপ-উপাচার্যদ্বয়ের বাসভবনে শিক্ষার্থীরা তালা দিলে বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। পরে তারা জুবেরী ভবনের দিকে আসতে থাকলে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে আসতে থাকে।

এক পর্যায়ে জুবেরী ভবনের বারান্দায় এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের আটকানোর চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খানকে চারপাশ থেকে আটকে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ধস্তাধস্তিতে আহত হন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপ-রেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ৭ জন।

হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখে। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে জড়ো হতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা ও রাকসুর পদপ্রার্থীরা। জুবেরী ভবনের ভিতরে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালা ভাংচুর করে।

এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, একটি মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে প্রশাসনের যে ভঙ্গি নেওয়া হয়েছে আমরা তা গভীরভাবে নিন্দা করছি। আমরা কাল থেকে শান্তিপূর্ণ অনশনে রয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কোনো গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। আজ আমাদের ওপর যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমি সকল শিক্ষার্থীকে আহ্বান জানাই—শান্তিপূর্ণভাবে যোগ দিন এবং আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ময়দান ছাড়ব না।

রাবি শাখা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, আর মাত্র চার দিন পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মীমাংসিত ইস্যু—পোষ্য কোটাকে সামনে এনে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষও ঘটে গেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটার ইস্যুর অবসান না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, পোষ্য কোটার বিষয় তো আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত না, প্রশাসনের সবার সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আমাকে বাসায় যেতে দেবে না, খেতে দেবে না এমন আন্দোলন আমি কখনো দেখিনি।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top