রাবি প্রক্টরের পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারী ২০২২ ০৫:১৬; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৩:৪৩

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বারবার ছিনতাইয়ের ঘটনা ও ছিনতাইকারীদের শনাক্তে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি যদি অপরাধী শনাক্ত করতে না পারে সিসিটিভি ক্যামেরার কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে এ মানববন্ধন আয়োজন করেন তারা।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকির সঞ্চালনায়
ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেন শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকতে পারে তার জন্য প্রক্টরিয়াল বডি দায়বদ্ধ। কিন্তু প্রক্টর জবাবদিহীতার জায়গায় গুলো থেকে সরে এসে উল্টো শিক্ষার্থীদের উপর দমন পীড়ন চলান। এই ক্যাম্পাসে প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জোহা স্যার ছাত্রদের নিরাপত্তা জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় একটা অযোগ্য প্রক্টর রয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি।

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মনমোহন বাপ্পা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে যে কোন ঘটনা ঘটলে শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় যে, তোমরা সাবধান হও। প্রক্টর বডি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে প্রক্টর থেকে লাভ কি? উপাচার্য বাস ভবনের সামনে ছিনতাই হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকার পরও ছিনতাইকারাী সনাক্ত হচ্ছে না তা দুঃখজনক।"


রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা,প্রক্টর ,পুলিশ রয়েছে এগুলো শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু আমরা দেখছি পুলিশ, সিসি ক্যামেরা, প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিচ্ছেনা। তারা কাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে, যে দিনের বেলায় ছিনতাইকারী ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে? প্রক্টরিয়াল বডি তাদের চিহ্নিত করতে পারছে না। তাহলে কি আমরা বুঝে নিব এ সব আয়োজন ছিনতাইকারী যেন নিরাপদে বের হয়ে যেতে পারে তার জন্য?

তিনি অভিযোগ করেন, এসব ছিনতাইকারীদের সাথে প্রক্টরিয়াল বডি জড়িত। প্রক্টরিয়াল বডি এক সাথে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব ঘটনা ঘাটাচ্ছে। নারী শিক্ষার্থীদের যে যৌন হয়রানির করা হচ্ছে, আরো যে পারিপার্শিক হয়রানি হয় তা প্রক্টরের টিম দ্বারা হচ্ছে। কোন ঘটনা ঘটলে প্রক্টরের কাছে জানালে তারা বলে জিডি করো। তাদের কি কোন দায়িত্ব নাই। এমন ব্যর্থ প্রক্টরের অবিলম্বে পদত্যাগ জানান তিনি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ খান বলেন, 'যখন অপরাধের বিচার না হয় তখন অপরাধী বারবার অপরাধ করার সুযোগ পায়। তাদের মধ্যে ডোন্ট কেয়ার মনোভাব সৃষ্টি হয়। ফলে তারা বারবার অপরাধ করে। যে জায়গায় জোহা স্যার ছাত্রদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে জীবন দিয়েছেন। সেই জায়গায় বর্তমানে একজন অযোগ্য প্রক্টর নিজে একটি নির্দেশনা দিয়ে বলেন যে এমনি এমনি দিয়েছি এবং পরে সেটা প্রত্যাহার করেন। এছাড়া প্রফেসর না হয়েও নামের শুরুতে প্রফেসর লিখে নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছেন। এভাবে তিনি তার প্রক্টর থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে মনে করি।'

এসময় শিক্ষার্থীরা, 'সিসি ক্যামেরার কাজ কী?" ''নিরাপত্তার অযুহাতে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করো" "ক্যাম্পাসে ছিনতাই হয় প্রক্টর ঘুমায়" "দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরের পদত্যাগ চাই","ক্যাম্পাসে ছিনতাই হয় দায় কার? এমন প্লেকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চিত্র কলা প্রাচ্য কলা ও ছাপচিত্র বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আসফাক আহমেদ, ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার আহবায়ক রনজু হাসান, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন চন্দ্র মোহন্ত, চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মনমোহন বাপ্পাসহ বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী।


এর আগে, ৩১ ডিসেম্বর দিনে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাইশা জান্নাত ছিনতাইয়ের শিকার হয়। ৩ দিনের ব্যবধানে আবারও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসময় ছিনতাইয়ের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে সালমা বৃষ্টি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এসময়ের মধ্যে অন্তত ৫ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top