সাদামাটা আয়োজনে রাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ০১:৫৯; আপডেট: ৪ মে ২০২৪ ০০:১৪

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

কোন আড়ম্বরপূর্ণ উদযাপন ছাড়াই সাদামাটা আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পহেলা বৈশাখ। প্রতিবছর ক্যাম্পাস ঘিরে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর উৎসুক জনতার ভিড় থাকলেও এবছর তা লক্ষ্য করা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা প্রাঙ্গণেও নববর্ষ উদযাপন আমেজের কোন প্রাণচঞ্চল্যতা ও মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল না।

বর্ষবরণ উপলক্ষে চারুকলা চত্বরের ভবনটিতে দেয়ালচিত্র তৈরি করা হয়েছে। রং তুলিতে আঁকা হয়েছে বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রামাণ্যচিত্র। দেয়ালের চিত্রপ্রদর্শনীগুলো যেন সাংস্কৃতিক মননের বাঙালী সমাজের মিলনমেলায় পরিণত হওয়ার অস্তিত্ব বহন করছে।

তবে প্রতিবারের মতো এবারও মূল আয়োজক ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ। 'খেরোখাতায় আঁকবো রে আজ, শিল্পী মনের কথা। রঙ ছাড়িয়ে রাঙাবো আজ, আমাদের হালখাতা'_ প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে এবছর উদযাপিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ।

দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক সুলতান_উল_ইসলাম, সভাপতিত্ব করেন চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।

এসময় বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বাঙালীর ঐতিহ্যের ইতিবাচক বিষয়গুলোকে ধারণ করা এবং নেতিবাচক বিষয়গুলোকে বর্জন করার পরামর্শ দেন। নতুন বছরটি সকলের জন্য শুভ ও কল্যাণময় হোক, বয়ে আনুক সাফল্য ও সমৃদ্ধি এই প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন। এসময় খেরো খাতার উদ্বোধন ও শখের হাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

এছাড়া নববর্ষকে বরণ করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, বাঙালির হাজার বছরের লোকসংস্কৃতিকে ধারণ করে প্রতিবছর পালিত হয় পহেলা বৈশাখ। এটি বাঙালীর মনন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। তবে এখানে যেভাবে দোয়ালে চিত্র এঁকে নারীকে স্বল্প বস্ত্রে ও অর্ধ উলঙ্গ দেখানো হয়েছে তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত ছিল। বাঙালি নারীরা কি এতটাই নির্লজ্জ ও বেহায়া যে তাদের বক্ষ জামা দিয়ে না ঢেকে শুধু আঁচল দিয়ে ঢাকবে বা নাভী খোলা রেখে হাঁটবে?

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা ফাহমিদা আক্তার বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে আবারও আমরা সকলেই নববর্ষের উৎযাপনে মেতে উঠতে পারছি তা অবশ্যই ভালো লাগার। দুই বছর পর পরিবারের সাথে নববর্ষ উৎযাপন করতে পারছি যা আরো ভালো লাগার। নববর্ষ মানেই নতুন উদ্যম নিয়ে চলা, নতুন কিছু উদ্ভাবন করা, নতুন বছরে পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে ফেলে পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে চলতে চাই এটাই নতুন বছরের প্রত্যাশা। স্বল্প পরিসরে হলেও এতো সুন্দর একটা আয়োজন করার জন্য চারুকলা অনুষদকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান তিনি।

বর্ষবরণের সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে কোন প্রোগ্রাম হচ্ছে না। সেজন্য আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে স্থানীয়ভাবে স্বল্প পরিসরে আয়োজন করেছি। এছাড়াও আজ সন্ধ্যায় ইফতার ও খালখাতার মিষ্টিমুখ করানো হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এটা এক অর্থে বৃহৎ অনুষ্ঠান হয়েছে। দুটি অর্থে আমার অনুষ্ঠানটি ভাগ করেছি। একটি হলো- দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে আমরা বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরেছি। আরেকটি হলো বৈশাখের শেষ দিনে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top