রাজশাহীতে কবে পাওয়া যাবে সুপেয় পানি?

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২ ০৫:০২; আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৫৬

ছবি : প্রতিকী

রাজশাহী শহরে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) এই পানি পানযোগ্য নয়। ওয়াসা উদ্যোগী হয়ে পরীক্ষা করালে পানিতে পাওয়া গেছে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। বছরের পর বছর ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত এসব পানিই বাধ্য হয়ে পান করে আসছেন নগরবাসী।

এ অবস্থায় নগরবাসীকে সুপেয় পানি খাওয়াতে একটি প্রকল্প নেয় ওয়াসা। পদ্মা নদীর পানি পরিশোধন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু প্রায় চার হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই। চীন থেকে ঋণের অর্থ না পাওয়া এবং পাইপলাইন বসানোর জায়গা নিয়ে জটিলতার কারণে সুপেয় পানির অপেক্ষা বাড়ছে নগরবাসীর।

রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভূপরিস্থ উৎস থেকে সুপেয় পানি সরবরাহ বৃদ্ধি করতে চার হাজার ৬২ কোটি টাকার প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রকল্প বাস্তবায়নে গত ২১ মার্চ ঢাকায় রাজশাহী ওয়াসা এবং চীনের হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রকল্পের মোট অর্থের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার এক হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা এবং এক্সিম ব্যাংক অব চায়না দুই হাজার ৩১৩ কোটি টাকা দেবে।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে চার বছর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন ২০০ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। কিন্তু প্রকল্পের কাজের আর কোন অগ্রগতি নেই। বিষয়টি গত জুন মাসের বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় ওয়াসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রকল্পের মূল শোধনাগার নির্মাণ হবে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে। এ জন্য সরকারি অর্থায়নে ৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। গোদাগাড়ী থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশ দিয়ে পাইপলাইন আসবে শহরে। এই জমি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের। সওজের কাছে জমি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে ওয়াসা। কিন্তু সওজ এ বিষয়ে কোন অগ্রগতি জানায়নি।

এদিকে ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, একে তো সওজের সঙ্গে জমি জটিলতা, তার ওপর চীন থেকে ঋণের অর্থ না আসায় কাজ শুরু হয়নি কিছুই। কবে নাগাদ জটিলতা কাটতে পারে তা বলতে পারছেন না ওয়াসার কর্মকর্তারা। ফলে সুপেয় পানির জন্য রাজশাহী নগরবাসীর অপেক্ষা বাড়ছে।

জমি জটিলতা নিয়ে জানতে চাইলে সওজের রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের জন্য যখন ওয়াসা সমীক্ষা করে তখন সওজের জায়গায় পাইপলাইন করার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। ওই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। সে কারণে এখনই আমরা জায়গা দিতে পারছি না। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে যারা সমীক্ষার কাজ করছেন, আমরা তাদের পরামর্শ চেয়েছি। তারা যেভাবে পরামর্শ দেবে সেভাবে ওয়াসাকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকীর হোসেন স্বীকার করেন প্রকল্প প্রস্তুতের আগে সওজের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। তিনি বলেন, প্রকল্প প্রস্তুতের পরই তো জায়গার বিষয়ে কথাবার্তা হয়। এটা আগে হয় না। একটা জটিলতা দেখা দিয়েছে, সমাধানও হবে। জাকীর হোসেন জানান, চীন থেকে ঋণের অর্থ না আসায় তারা কাজও শুরু করতে পারছেন না। এ বিষয়টি ঢাকায় সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে দেখা হচ্ছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top