চরম দুর্ভোগের পর রাজশাহী থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৪:২৫; আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০৩:১০

ফাইল ছবি

যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহান্তির পর রাজশাহী থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথমেই ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। এর আগে রেলওয়ে রানিং স্টাফদের পেনশনের সঙ্গে মাইলেজ সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়ার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ছয়টা থেকে আকস্মিকভাবে কর্মবিরতি শুরু করায় সারা দেশের মত রাজশাহী থেকেও সকল প্রকার ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে রাজশাহী স্টেশনে আটকা পড়ে সকল রুটের ট্রেন।

জানাগেছে, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকালে বনলতা, সিল্কসিটি, সাগরদাঁড়ি ও মধুমতি এক্সপ্রেসসহ সব আন্তঃনগর, কমিউটর ও মালবাহী ট্রেন চলাচল পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ ছিল। এতে নির্ধারিত সময়ে রেলওয়ে স্টেশনে এসে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের যাত্রীরা। অনেকে টিকেট ফেরত দিয়ে বিকল্প হিসেবে বাসে করে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। ভিড় থাকায় অনেকে আবার টিকেটের মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে ফেরত পাননি। তদেরকে পরে আসার কথা বলা হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, লোকো মাস্টারদের (ট্রেন চালক) আকস্মিক কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর, বিরতিহীন, কমিউটার ও মালবাহীসহ মোট ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। সবগুলো ট্রেনই বন্ধ ছিল। এদিকে এ ঘটনায় রেলমন্ত্রী সকালেই ঢাকার কমলাপুরে ছুটে যান। আলোচনা শেষে মন্ত্রীর আশ্বাসের পর কর্মবিরতি তুলে নেওয়ায় আবারও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথমেই ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনে সকালের বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের অপেক্ষমাণ যাত্রীদেরও তুলে নেওয়া হয়। এরপর স্টেশন থেকে বিভিন্ন রুটের ট্রেন এক এক করে ছেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে দিয়ে রাশাহীর সঙ্গে রেলপথে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আবারও স্বাভাবিক হয়েছে।

রেলওয়ের রানিং স্টাফ (চালক-গার্ড) ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান জানান- অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় ট্রেনের লোকো মাস্টার ও রানিং স্টাফ কর্মচারীরা কর্ম বিরতিতে গিয়েছিলেন। পরে দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়ায় তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, এখন ট্রেন চলছে।

রেল যোগাযোগ সচল রাখতে সাধারণত একজন চালককে দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হয়। এজন্য তাদের বাড়তি মজুরি ও পেনশনে ৭৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়। বেতনের বাইরেও যত মাইল দায়িত্ব পালন করেন এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, তার জন্য নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেয়ে থাকেন তারা। এটা রেলে ‘মাইলেজ ভাতা’ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি রেলের অতিরিক্ত এ সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেল চালকরা বুধবার থেকে আবারও কর্মবিরতিতে যান। এর আগে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণাও দেন তারা। এ কারণে একবার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়েরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top