সম্রাট আওরঙ্গজেবের অজানা অধ্যায়

মহিব্বুল আরেফিন | প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩ ২২:৪৭; আপডেট: ৮ মে ২০২৩ ২২:৪৭

মুঘল সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ সম্রাট মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব

মুঘল সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ সম্রাট আল-সুলতান আল-আজম ওয়াল খাকান আল-মুকাররম আবুল মুজাফফর মুহিউদ-দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র। ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে আহোরণ (রাজ্যাভিষেক ১৩ জুন ১৬৫৯ খ্রি: শালিমার, দিল্লী) করে (জন্ম: ৪ নভেম্বর ১৬১৮ খ্রি.) মৃত্যুর (মৃত্যু: ৩ মার্চ ১৭০৭ খ্রিষ্টাব্দ।) আগে পর্যন্ত ৪৯ বছর মুঘোল সাম্রাজ্য শাসন করেন। তিনি সম্রাট আওরঙ্গজেব নামেই সর্বাধিক পরিচিত।

মুসলিম জাহানের মহান এই সম্রাটকে ‘বাহাদুর আলমগীর, বাদশা গাজী, প্রথম আলমগীর’ নামেও সম্বোধন করা হতো। তবে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সম্পূর্ণ রাজকীয় নাম ছিল- ‘আল-সুলতান আল-আজম ওয়াল খাকান আল-মুকাররম হযরত আবুল মুজাফফর মুই-উদ-দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বাহাদুর আলমগীর প্রথম, বাদশা গাজি, শাহানশাহ-ই-সালতানাত-আল-হিন্দিয়া ওয়া আল মুগলিয়া।’

আগ্র দুর্গ

এছাড়া মুসলিমদের মাঝে তিনি জিন্দাপীর হিসেবেও বেশ সুপরিচিত। সম্রাট ভারতবর্ষ এবং বর্তমান বাংলাদেশের বহু সংখ্যক পির-আউলিয়াদের মদদ-ই-মাস হিসেবে মসজিদ, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং খানকা পরিচালনার জন্য জায়গেরদারীসহ নগদ অর্থ দান করেন। এমন কি সম্রাট আওরঙ্গজেব লষ্কর বহর নিয়ে পদ্মা নদী দিয়ে যাবার সময় তিনি (বর্তমান রাজশাহী নগরীর দরগাপাড়ায় শায়িত) হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.) এর মাযার শরিফ যিয়ারত করেন এবং এখান থেকে রসদ সামগ্রী সংগ্রহ করেন।
সম্রাট হওয়া সত্বেও আওরঙ্গজেব সাধারণ মানুষের মত জীবন যাপন করতেন। শাসক হিসেবে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের পদাংক অনুসরণ করতেন। যার একটি নমুনা পাওয়া যায় দরবারী ইতিহাস লেখা প্রকল্প বন্ধ করণের মধ্য দিয়ে। সম্রাট আরঙ্গজেব এর রাজত্বকালের দরবারী ইতিহাস হচ্ছে আলমগীর নামা। তিনি প্রথমে মিরজযা মুহাম্মদ কাজিমকে তাঁর রাজত্বকালের ইতিহাস লেখার আদেশ দেন এবং তিনি সম্রাটের রাজত্বকালে প্রথম দশ বৎসরের ইতিহাস লিখেন। যার নাম ‘আলমগীর নামা’। যা ১১০৭ পৃষ্ঠা সম্বলিত বিশাল আকারের একটি বই। রাজত্বের প্রথম ১০ বছরের ইতিহাস লিখিত হবার পর (সমাপ্ত ১৬৭০ খ্রিষ্টাব্দ) সম্রাট আওরঙ্গজেব মিরজযা মুহাম্মদ কাজিমকে ইতিহাস লিখতে নিষেধ করেন এবং এক পর্যায়ে ইতিহাস লিখার প্রকল্পই বন্ধ করে দেন।”

সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি

এ বিষয়ে স্যার যদুনাথ সরকারের মতে, ‘ সম্রাট আরঙ্গজেব আর্থিক দুরবস্থার কারণে ইতিহাস লেখা বন্ধ করা হয়, ইহা সত্য বলে মনে হয় না।---তিনি বিশ্বাস করতেন যে, স্বীয় কৃতিত্ব ফলাও করে প্রচার করার চেয়ে, ধর্মীয় অনুশাসন পুরোপুরি মেনে চলাই শ্রেয়।’ এ থেকে বোঝা যায় দরবারী ইতিহাস লেখা কে তিনি রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপচয় মনে করতেন। সে কারণেই তিনি ইতিহাস লেখার প্রকল্প বন্ধ করে দেন। সম্রাট আরঙ্গজেব মুলত পূর্ণাঙ্গভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার কারণের তার ব্যক্তি জীবনযাত্রা ছিলো অন্যান্য সম্রাটদের চেয়ে সম্পূর্ণই আলাদা। তিনি কুরআন হেফজ হবার পাশাপাশি একজন বিজ্ঞ আলেমও ছিলেন। একই সাথে তিনি আরবি-ফারসি, তুর্কীয়, হিন্দিসহ অন্যান্য আরও ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি ইসলামী শরিয়তের পরিপূর্ণ প্রবর্তনের লক্ষ্যে তিনি সাম্রাজ্যের মৌলিক কয়েকটি বিষয়ে বড় ধরণের পরিবর্তন আনেন।এর মধ্যে-

০১. জিজিয়া কর : ১৬৭৯ সালের ২রা এপ্রিল ‘জিজিয়া কর’ প্রথা চালু করেন। আর মুসলমানদের জন্য যাকাত ও ওশর অর্থাৎ জমি হতে উৎপন্ন ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ দেয়া বাধ্যতা মূলক করেন। তবে জিজিয়া কর প্রথা চালু করায় হিন্দুগণ মনঃক্ষুন্ন হন। কারণ পূর্ববর্তী সম্রাটদের সময় দীর্ঘকাল ধরে জিজিয়া কর রহিত ছিলো।

০২. দর্শন প্রথা রহিত করণ: ১০৭৯ হিজরি সালে দর্শন প্রথা অর্থাৎ সকাল বেলা বাদশার পবিত্র মুক্তি লাভের আশায় আগমন করা এবং যতক্ষণ না ঘটে ততক্ষণ আহার গ্রহণ না করা। তিনি এই প্রথা বন্ধ করে দেন।

০৩. নওরোজ প্রথা বন্ধ: ১০৮৮হিজরিতে মুঘল সম্রাটদের দরবারে নওরোজ নামে একটি প্রথা চালু ছিল। এ প্রথার মাধ্যমে দরবারে অহঙ্কার ও বিলাসিতা প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা হতো। মুঘোল কর্মচারীদের মধ্যে মদ্যপানের প্রচলন ও (চীন থেকে আমদানীকৃত) আফিম খাওয়ার প্রথা বন্ধ করেন। এক কথায় ইসলামবিরোধী নওরোজ প্রথা তিনি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন।

এছাড়া সম্রাট আওরঙ্গজেব নিজ হাতের লেখা কুরআন শরিফ বিক্রী এবং টুপি সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাষ্ট্র ও জাতির রাজকোষ থেকে নিজের জন্য অর্থ গ্রহণ করাকে তিনি বৈধ্য মনে করতেন না। টুপি ও কোরআন থেকে শেষ জীবনে মাত্র ‘আটশ পাঁচ টাকা’ সঞ্চয় করেন।

সম্রাট আওরঙ্গজেব এর স্বহস্তে লিখিত একটি উইল মৃত্যুর পর তাঁর বালিশের নিচে পাওয়া যায়। আহকাম-ই-আলমগীরীতে বর্ণিত উইল এর উল্লেখযোগ্য অসিয়ত নামার মধ্যে হলো:
(ক) আমার টুপি সেলাই এর ‘চার টাকা দুই আনা’ গচ্ছিত আছে, মহলদার আইয়া বেগ এর কাছে। এটা দিয়ে ক্রয় করো অসহায় এই জীবের কাফনের কাপড়।

(খ) কুরআন শরিফ (লিখিত কপির) বিক্রীর তিনশত পাঁচ টাকা রাখা আছে আমার থলিতে। আমার মৃত্যুর দিন ওটা বিতরণ করে দিও ফকিরদের মধ্যে। যেহেতু কুরআনের মাধ্যমে উপার্জিত টাকা শিয়ারা সুনজরে দেখেনা, ওটা যেন ব্যয় করোনা আমার কাফনের কাপড় কেনা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে।

(গ) আমার শবযান এর ওপর কফিনের মাথার দিকটা ঢোকো অমসৃণ মোটা ‘গজি’ নামের সাদা কাপড়ে।
(ঘ) ওর উপরে টাঙ্গিয়না সামিয়ানা।
(ঙ) বাতিল করো গায়কদের শোভাযাত্রা।

সম্রাট আওরঙ্গজেবর খোদাভীরুতার জন্য সাধারণ গণমানুষের কাছে 'জিন্দা পির' হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করেন। একই সাথে ধর্মীয় কঠোর অনুশাষনের জন্য তাকে আমিরুল মুমিনিন (বিশ্বাসীদের নেতা) ডাকা হয় এবং বিশিষ্ট খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) ও সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব (রহ.) এর সাথে তুলনা করা হয়। তাঁর অনবদ্য রচনা “ফতোয়ায়ে আলমগীরী”। বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়। এমনকি এটিকে শরিয়াহ আইন এবং ইসলামি অর্থনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শাষক হিসেবে প্রকৃতপক্ষে তিনিই প্রায় সম্পূর্ণ ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেন। তাঁর আগে এবং তাঁর শাষন আমলের প্রথম সময়ও হিন্দুরা ব্যাপক দুধর্ষ ছিল।

সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকাল এর সপ্তমবর্ষ পর্যন্ত হিন্দুরা এত প্রবল ছিল যে, “মসজিদগুলোকে ভেঙে নিজেদের বসবাসের কাজে ব্যবহার করত এবং মুসলিম সম্ভ্রান্ত মহিলাদের বলপূর্বক ঘরে আটকে রেখে বিয়ে করত”। এছাড়া আরঙ্গজেব এর দ্বাদশবর্ষ রাজত্বকাল পর্যন্ত হিন্দুদের অবস্থা এমন ছিল যে, তারা প্রকাশ্য ভাবে মুসলমানদের তাদের সাম্প্রদায়িক বিদ্যা শিক্ষা দিত। আওরঙ্গজেব যখনই শিক্ষা বন্ধ করতে প্রস্তুত হলেন তখন হিন্দুদের ভিতর বিদ্রোহ শুরু হয়।

সম্রাট আওরঙ্গজেব সাম্রাজ্যের সীমানা বহুদূর বিস্তার করে দক্ষিণাঞ্চলে ৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি ১৫৮ মিলিয়ন প্রজাকে শাসন করতেন। তাঁর সময় সাম্রাজ্যের বাৎসরিক করের পরিমাণ ছিল ৪৫০ মিলিয়ন ডলার। যা তার সমসাময়িক চতুর্দশ লুইয়ের আমলে ফ্রান্সের বাৎসরিক কর এর চেয়ে ১০ গুণ বেশি ছিল। তাঁর সময় ভারত চীনকে ছাড়িয়ে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে গড়ে উঠেছিল। যার পরিমাণ ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলার। যা ১৭০০ সালে সমগ্র পৃথিবীর জিডিপি’র এক চতুর্থাংশ। ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় তার শাসনামলে সমপরিমাণ রাজস্ব অন্যকোন সম্রাটের সময় হয়নি। এমনকি তিনি ৪ কোটি পাউন্ড অর্থাৎ ৬০ কোটি টাকা মওকুফ করে দেন। কিছু ঐতিহাসিক আওরঙ্গজেবকে শাসক হিসেবে “বিতর্কিত এবং সমালোচিত” করার চেষ্টা করেছেন। তার আমলে অনেক হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল প্রপাগান্ড চালানো হয়।

তবে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, তাঁর হিন্দু মন্দির ধ্বংসের বিষয়টি অতিরঞ্জিত। মার্কিন ইতিহাসবিদ (ইউনিভার্সিটি অব নিউয়ার্কে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস শিক্ষক) অড্রে ট্রাশকা তাঁর বই 'আওরঙ্গজেব-“দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ' বইয়ে লিখেছেন, “আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস করেছেন বলে যে দাবী করা হয়, তা ভুল”।

তিনি লিখেছেন,“ব্রিটিশদের শাসনের সময় তাদের 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' অর্থাৎ জনগোষ্ঠীকে 'বিভাজন আর শাসন করো' নীতির আওতায় ভারতে হিন্দু বর্ণবাদী ধারণা উষ্কে দেয়ার কাজটি করেছিলেন যেসব ইতিহাসবিদরা, তারাই মূলত: আওরঙ্গজেবের এমন একটি ইমেজ তৈরির জন্য দায়ী”।

তিনি তাঁর বইয়ে আরও বলেন,“ আওরঙ্গজেব’র শাসন যদি ২০ বছর কম হতো, তাহলে হয়তো আধুনিক ইতিহাসবিদরা তাকে অন্যভাবে দেখতেন।

তবে ঐতিহাসিক তথ্য উপাত্বে দেখা যায়, সম্রাট আওরঙ্গজেব তার আমলে বেশ কিছু মসজিদ এবং মন্দির ধ্বংস করা নির্দেশ দান করেন। এর মধ্যে মন্দির গুলো ছিল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু। অপর দিকে কর ফাঁকি দেয়ার জন্য যেসকল মসজিদ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ধ্বংসকৃত গোলকুন্ডা জামে মসজিদ অন্যতম। অপর দিকে ঐতিহাসিকরা বর্ণনা করেন সম্রাট মন্দির নির্মাণে প্রচুর অর্থ অনুদান দেন। তাঁর আমলে তার পূর্বসূরীদের তুলনায় মুঘল প্রশাসনের সর্বোচ্চ সংখ্যক হিন্দু কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। এখানে ‘প্রফেসর শর্মা কর্তৃক সংগৃহীত পরিসংখ্যানটি উল্লেখ করাই যথেষ্ট হবে।

এ পরিসংখ্যান ‘ মোগল সম্রাটগণের ধর্মীয় কর্ম কৌশল’ নামক গ্রন্থ হতে নেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে; “আকবরের শাসনামলে ‘এক হাজারী’ ও এর চেয়ে ওপরের মোট ১৩৭টি মুনসেবদার পদ ছিল, যেগুলোর মধ্যে ১৪ জন ছিলেন হিন্দু। জাহাঙ্গীরের সময়ে ‘তিন হাজারী’ এবং তার উপরের সর্বমোট ৪৭টি মুনসেবদারের মধ্যে ৬ জন হিন্দু ছিলেন। শাহজাহানী আমলে ‘এক হাজারী’ ও এর উপরের মোট ২৪১টি মুনসেবদারের মধ্যে ৫১ জন ছিলেন হিন্দু। শাহজাহানের যুগে ছোট বড় সর্ব মোট ৮ হাজার মুনসেবদার ছিলেন। আওরঙ্গজেব আলমগীরের সময়ে তাদের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হাজার ৫ শত ৫৬ (১৪,৫৫৬) হয়ে যায়, তাদের মধ্যে ১৪৮ জন ছিলেন হিন্দু।” উদ্ধৃত পরিসংখ্যান সম্পর্কে বলা হয় যে, এতে প্রমাণিত হয় আওরঙ্গজেব আলমগীরের সময়ে মুনসেবদারের মোট সংখ্যা শাহজাহানের সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি না হলেও হিন্দুদের মুনসেফদারের সংখ্যা প্রথম থেকে প্রায় তিন গুণ হয়েছিল।

তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ তোলা হয় পিতার প্রতি রুক্ষ ব্যবহার করতেন।কিন্তু ইউরোপীয়ান ঐতিহাসিক বোর্নিয়ার বলেন, “শাহজাহানের বন্দী অবস্থায় আওরঙ্গজেব তাঁর প্রতি ভক্তি সম্মানজনক ব্যবহার করতেন। ওই সময়ে রাজ কার্জ্যে তিনি প্রত্যেক বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করিয়া কাজ করিতেন। এক স্বাধীনতা ব্যতীত পিতার সকল মনোরঞ্জন করেছেন। পরে পিতা অপরাধ মার্জনা করিয়া তাহাকে আশীর্বাদ করিতেও ইতস্ততঃ করেন নাই। তাঁর মৃত্যুর পর ভারতের মধ্যযুগীয় যুগ শেষ হয়। আর ইউরোপীয় আক্রমণ শুরু হয়। কারণে সম্রাট আওরঙ্গজেব সম্পর্কে ইংরেজ এবং হিন্দু বহু ইতিহাসবিদ সত্য ইতিহাসের বদলে মিথ্যা কাল্পনিক ইতিহাস রচনা করে গেছেন। ফলে সেই ইতিহাস অনেকেই ‘সত্যে’ বলে মনে করেন।

একটি প্রচলিত মতবাদ আছে, “ইতিহাস দর্শনের একটা রহস্য এইযে, যে সকল ঘটনা যত বেশি প্রচার লাভ করে তাদের সত্যতা ততই সংশয় জনক হয়ে পড়ে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে-হাসির দেয়াল, বাবেলের কূপ, আবে হায়াত ইত্যাদি মত কোন বিশেষ সাধারণ অধিক প্রসার লাভ করেনি। এদের মূলে কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অর্থাৎ অধিকাংশ বিশেষ কোনো সাময়িক কারণে প্রসিদ্ধি লাভ করে। তারপর গতানুগতিকতার প্রভাবে তার বহুল প্রচার ঘটে এবং তার প্রতি আস্থা স্থাপন করতে আরম্ভ করে। এমনকি তখন আর সত্যাসত্য করবার প্রয়োজন বোধ করে না। হলে, ধীরে ধীরে তা সর্ববাদী সত্য সম্মত হয়ে পড়ে।”


তথ্য সূত্র:
০১ . মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। লিংক: যঃঃঢ়ং://িি.িবশঁংযবু.
০২ . আওরঙ্গজেব উইকিপিডিয়া। লিংক: যঃঃঢ়ং://নহ.রিশরঢ়বফরধ.ড়ৎম/ং/৫৯৬; সংগ্রহ তারিখ : ০৮-০৫-২২ ইং।
০৩. বাংলার ইতিহাস-মোগল আমল (২য় খন্ড) আব্দুল করিম; প্রথম প্রকাশ: আগস্ট-২০১৭; প্রকাশক: কমলকান্তি দাস, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ; আই এস.বি.এন: ৯৮৪-৮৩৯১-০৩২১-৮।
০৪. হযরত শাহ্ মখদুম রুপোশ (রহ.) এর জীবনেতিহাস: মুহম্মদ আবূ তালিব। ২য় সংষ্করণ মে-১৯৭৯। পৃ: ১২২।
০৫. বাংলার ইতিহাস-মোগল আমল (২য় খন্ড): আব্দুল করিম; পৃষ্ঠা: ২৯; প্রথম প্রকাশ: আগস্ট-২০১৭; প্রকাশক: কমলকান্তি দাস, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ; আই এস.বি.এন: ৯৮৪-৮৩৯১-০৩২১-৮।
০৬. সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর বাহির-জয়নাল হোসেন; পৃষ্ঠা: ৮৬-৮৭। অ্যাডর্ন পাবলিকেশন-ফেব্রুয়ারী ২০১৩। আই এস বি এন:৯৭৮-৯৮৪-২০-০৩২১-৯।
০৭. আওরঙ্গজেব ঃ চরিত্র-বিচার- আল্লামা শিবলী নো’মানী: হাসান আলী আনূদিত, বাংলা একাডেমী, ঢাকা-প্রথম প্রকাশ: মে-১৯৬৯। পাতা: ৬৮।
০৮. আওরঙ্গজেব ঃ চরিত্র-বিচার- আল্লামা শিবলী নো’মানী: হাসান আলী আনূদিত, বাংলা একাডেমী, ঢাকা-প্রথম প্রকাশ: মে-১৯৬৯। পাতা: ৬৮।
০৯. আওরঙ্গজেব ঃ চরিত্র-বিচার- আল্লামা শিবলী নো’মানী: হাসান আলী আনূদিত, বাংলা একাডেমী, ঢাকা-প্রথম প্রকাশ: মে-১৯৬৯। পাতা: ৬৮।
১০.সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর বাহির-জয়নাল হোসেন; পৃষ্ঠা: ৭১। অ্যাডর্ন পাবলিকেশন-ফেব্রুয়ারী ২০১৩। আই এস বি এন:৯৭৮-৯৮৪-২০-০৩২১-৯।
১১ . সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর বাহির-জয়নাল হোসেন; পৃষ্ঠা: ১১৪। অ্যাডর্ন পাবলিকেশন-ফেব্রুয়ারী ২০১৩। আই এস বি এন:৯৭৮-৯৮৪-২০-০৩২১-৯।
. আওরঙ্গজেব ইউকিপিডিয়া। লিংক: যঃঃঢ়ং://নহ.রিশরঢ়বফরধ.ড়ৎম/ং/৫৯৬; সংগ্রহ তারিখ : ০৮-০৫-২২ ইং।
২. আওরঙ্গজেব ঃ চরিত্র-বিচার- আল্লামা শিবলী নো’মানী: হাসান আলী আনূদিত, বাংলা একাডেমী, ঢাকা-প্রথম প্রকাশ: মে-১৯৬৯। পাতা: ৭৩-৭৪।
৩. আওরঙ্গজেব ইউকিপিডিয়া। লিংক: যঃঃঢ়ং://নহ.রিশরঢ়বফরধ.ড়ৎম/ং/৫৯৬; সংগ্রহ তারিখ : ০৮-০৫-২২ ইং।
৪. আওরঙ্গজেব ঃ চরিত্র-বিচার- আল্লামা শিবলী নো’মানী: হাসান আলী আনূদিত, বাংলা একাডেমী, ঢাকা-প্রথম প্রকাশ: মে-১৯৬৯। পাতা: ১১১।
. মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব কি সত্যিই হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন?: রেহান ফজল: বিবিসি হিন্দি, দিল্লি: ৭ মার্চ ২০১৮। লিংক: যঃঃঢ়ং://িি.িননপ.পড়স/নবহমধষর/হবংি-৪৩৩১৩২৩৫; সংগ্রহ তারিখ: ২২-০৫-২২ ইং।
৫. আওরঙ্গজেব ইউকিপিডিয়া। লিংক: যঃঃঢ়ং://নহ.রিশরঢ়বফরধ.ড়ৎম/ং/৫৯৬; সংগ্রহ তারিখ : ০৮-০৫-২২ ইং।
৬ . সম্রাট আওরঙ্গজেব : নিরপেক্ষ ও সত্যনিষ্ঠ ঐতিহাসিকদের দৃষ্টিতে: কে. এস. সিদ্দিকী। দৈনিক ইনকিলাব: প্রকাশের: ১৯ এপ্রিল, ২০১৯। লিংক: যঃঃঢ়ং://ড়ষফ.ফধরষুরহয়রষধন.পড়স/ধৎঃরপষব/২০০৬২৬/%ঊ০%অ৬%ই৮%ঊ০%অ৬%অঊ%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%ই০%ঊ০%অ৬%ইঊ%ঊ০%অ৬%৯ঋ-%ঊ০%অ৬%৮৬%ঊ০%অ৬%৯৩%ঊ০%অ৬%ই০%ঊ০%অ৬%৯৯%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%৯৭%ঊ০%অ৬%৯ঈ%ঊ০%অ৭%৮৭%ঊ০%অ৬%অঈ-%ঊ০%অ৬%অ৮%ঊ০%অ৬%ইঋ%ঊ০%অ৬%ই০%ঊ০%অ৬%অঅ%ঊ০%অ৭%৮৭%ঊ০%অ৬%৯৫%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%ই৭-%ঊ০%অ৬%৯৩-%ঊ০%অ৬%ই৮%ঊ০%অ৬%অ৪%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%অঋ%ঊ০%অ৬%অ৮%ঊ০%অ৬%ইঋ%ঊ০%অ৬%ই৭%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%অ০-%ঊ০%অ৬%৯০%ঊ০%অ৬%অ৪%ঊ০%অ৬%ইঋ%ঊ০%অ৬%ই৯%ঊ০%অ৬%ইঊ%ঊ০%অ৬%ই৮%ঊ০%অ৬%ইঋ%ঊ০%অ৬%৯৫%ঊ০%অ৬%অ৬%ঊ০%অ৭%৮৭%ঊ০%অ৬%ই০-%ঊ০%অ৬%অ৬%ঊ০%অ৭%৮৩%ঊ০%অ৬%ই৭%ঊ০%অ৭%৮উ%ঊ০%অ৬%৯ঋ%ঊ০%অ৬%ইঋ%ঊ০%অ৬%অ৪%ঊ০%অ৭%৮৭
৭. মুঘল ভারত-শ্রী যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রণীত-শিশির পাবলিশিং; হাউস১৯৭ নং কর্ণ ওয়ালিস্ স্ট্রীট, কলিকাতা পাতা-৯৮।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top