প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় স্বতন্ত্র এমপিরা

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২৪ ১১:১৩; আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০৩:৫০

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে জয়ী হয়ে আসা সংসদ সদস্যরা। আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী তাদের গণভবনে ডেকেছেন। সেখানে তিনি যে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ী সংসদে ভূমিকা পালন করবেন বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র এমপিরা। খবর দৈনিক কালবেলা। 

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সব স্বতন্ত্র এমপিকে সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই চূড়ান্ত হবে আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কে কোন ভূমিকা পালন করবেন।’

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের দাবি, তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের পদধারী, অনেকে সমর্থক। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনার জন্যই অপেক্ষা করছেন। যেভাবেই হোক না কেন, তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকতে চান, দলের জন্য ভূমিকা রাখতে চান। দলীয় সভাপতির যে কোনো নির্দেশনা মেনে চলতে প্রস্তুত তারা।

এ বিষয়ে বরিশাল-৪ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র এমপি ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, ‘সবাই আগ্রহ নিয়েই অপেক্ষা করছি। আমরা তো আওয়ামী লীগের বাইরের কেউ নই। নেত্রী আমাদের যে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেবেন, আমরা সে অনুযায়ী যার যার দায়িত্ব পালন করব। আমরা আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করতে চাই।’

অন্তত ১০ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার জন্য নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে তারা নির্বাচন করেছেন। বিএনপি অংশ না নেওয়ায় এ নির্বাচনের সৌন্দর্যই ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি তাদের।

পিরোজপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি মো. শামীম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আমরা যাব তার নির্দেশনা জানতে। তিনি যেভাবে বলবেন, সেভাবেই সংসদে ভূমিকা রাখব। তিনি কী বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দেবেন, তা বলা দুষ্কর।’

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয়ী হয়। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ১১টি আসন পায়। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে। এ ছাড়া ৬২টি আসনে জয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর মধ্যে ৫৭ জন আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। এ ছাড়া পদে না থাকলেও দুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন বিএনপি ও একজন জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত। আরেকজন ইসলামী সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহের নেতা।

সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র এমপিদের মধ্যে ৪৩ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করেন। চারজন জয় পেয়েছেন ১৪ দলের শরিক দলের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে। বাকিরা জয় পান জাপা এবং অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হারিয়ে। দলগুলো প্রাপ্ত আসনের হিসাবে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসন আওয়ামী লীগ পাবে ৩৭টি, জাতীয় পার্টি পাবে দুটি, আর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা পাবেন ১১টি আসন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী পাঁচটি দল ও ৬২ জন সংসদ সদস্যকে দল ও জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়ে মতামত জানাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা কমিশনকে জানাতে হবে। এর পরই সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই হিসাবে আজকের বৈঠকের পরই চূড়ান্ত হবে, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা কোন দলের সঙ্গে থাকবেন, না নিজেরা জোটবদ্ধ হবেন?

নীলফামারী-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পাভেল বলেন, ‘যাই বলেন না কেন—আমি আওয়ামী লীগের কর্মী, সমর্থক বা নেতা। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার বাইরে যাব না। মঙ্গলবার সংসদ শুরু হচ্ছে। আর ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে, কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবো কি না? সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top