কেন্দ্রে ভোটার আনতে নানামুখী চেষ্টা ইসির

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪৯; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ২০:১৮

- ছবি - ইন্টারনেট

প্রকৃতপক্ষে দেশের ভোট উৎসবে ভাটা পড়েছে। আগে ভোট হলে শহর-গ্রামে উৎসবে পরিণত হতো। আর এখন ভোট মানেই আতঙ্ক, জোর করে ব্যালটে সিলমারা, ক্ষমতার অপব্যবহার করা। আর এসব কারণে ভোট ব্যবস্থাপনায় এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এই অনাস্থা দূর করতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নানামুখী চেষ্টা চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খবর ইত্তেফাকের। 

একাধিক নির্বাচন কমিশনার বিভিন্ন জেলায় গিয়ে কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করছে। কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রভাববিস্তারকারী কাউকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণাও দিচ্ছেন ইসির সংশ্লিষ্টরা।

ভোটারবিহীন নির্বাচন, চুন ছাড়া পানের মতো মন্তব্য করে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা। গতকাল ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি। রাশেদা সুলতানা আরো বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রের সৌন্দর্য থাকে না। তাই নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তীব্র দাবদাহের কারণে আসন্ন ৮ মে থেকে শুরু হওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম হতে পারে বলে মনে করছে ইসি। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে এখন ধানকাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। পুরুষ ভোটারদের বড় একটি অংশ ধানকাটা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকে। এ কারণে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও এবারের উপজেলা নির্বাচনে বেশির ভাগ বড় বড় রাজনৈতিক দল দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে ২৭টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল, সেই দলগুলোর অনেকেই উপজেলার ভোটে নেই। যারা বর্তমানে প্রার্থী তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত। মূলত ভোট হচ্ছে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর। এই পরিস্থিতিতে ভিন্নমতের ভোটারদের কেন্দ্রে আনা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন ইসির সংশ্লিষ্টরা।

প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকলেও দলীয়ভাবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়স্বজনদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু দেখা গেছে, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে স্থানীয়ভাবে অনেক এমপির আত্মীয়স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন। এতে করে তৃণমূলে ভোটাররা কিছুটা আতঙ্কগ্রস্ত।

এবার যারা তিনটি পদে প্রার্থী হয়েছেন তার সিংহভাগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমনকি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন, কংগ্রেস ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টি-জাপা, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ভোটে থাকলেও দলগুলোর মধ্যে গা-ছাড়া ভাব লক্ষ্যণীয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাপনায় ভোটারদের অনাস্থা ও অনাগ্রহ তৈরি হয়। এরপর অনুষ্ঠিত উপজেলা ভোটে ব্যাপক অনিয়ম ছড়িয়ে পড়ে।

তারপর পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিগত ৭ জানুয়ারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্জনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ভোটের প্রদত্ত হার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে শেষ এক ঘণ্টায় অস্বাভাবিক ভোট দেখানো নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ইসিকে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top