দুজন সরকারে এসেছি, বাকিরা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে মাঠে: নাহিদ

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৪৮; আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:০৮

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বর্তমানে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ নামে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, তার ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকারের প্রতিনিধি বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এ সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে তারা দুজন এসেছেন। বাকিরা মাঠে ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে এখনো আন্দোলন করছেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সচিবালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ তাকে এসব জানান।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নতুন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাতে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তা ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকার। সমন্বয়কারীদের মধ্যে আমরা দুজন সরকারে এসেছি। বাকিরা এখনো আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয় এবং সরকার যেন সে কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করে, সেজন্য বাইরে থেকে তারা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনলেও এক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে, তার সুফল পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। আমরা দুর্নীতির জায়গাগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি।’

সম্প্রতি বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বন্যার্তদের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বন্যাদুর্গত এলাকায় ইন্টারনেট ফ্রি করে দেওয়া হয়। কয়েকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপন করে মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখা হয়।’

তিনি বলেন, ‘টাওয়ারগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটরের ফুয়েলও ফ্রি করে দেওয়া হয়েছিল। আগামীতে আমরা দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে যেকোনো দুর্যোগে সেই এলাকায় মোবাইল বা টেলিযোগাযোগ করা সম্ভব হয়।’

রাষ্ট্রদূত সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দিতে চায়- এমন আগ্রহ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি এখন বর্ডার সিকিউরিটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের তরুণরা এবং অফিসিয়ালরা যদি এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন, তবে তা দেশের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’

সাক্ষাতের শুরুতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। ফ্রান্সের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সবসময় আগ্রহ ছিল এবং আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও একাত্তর টিভির সাংবাদিক ফারজানা রুপার বিষয়ে জানতে চান। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে আমরা খুবই সচেতন। আমরা চাই, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। আমরা চাই না সামনের বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটুক।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তর টিভি ও ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে বেশকিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাচ্ছি, যেখানে সবাই তার মতো স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে। পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাসের মধ্যদিয়ে আলোচনা শেষ হয়।’

সাক্ষাৎকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ডা. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top