রাজশাহীতে গণসমাবেশ করতে বিএনপিকে ৮ শর্ত

রাজটাইমস ডেস্ক:  | প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৩:২৭; আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৩:২৮

ছবি: সংগৃহীত

আট শর্তে আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ও মাইক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।

বুধবার দুপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে অনুমোদ ও শর্তগুলোর বিষয়ে জানানো হয়েছে। সমাবেশের জন্য আবেদনকারি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর নামে পুলিশের পক্ষ থেকে এই চিঠি ইস্যু করা হয়।

মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, আট শর্তে গণসমাবেশ ও মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিতে হবে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে।

পুলিশের দেয়া শর্তগুলো হলো-

১। মাদ্রাসা ময়দান চত্বরের মধ্যে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবন্ধ রাখতে হবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমাবেত হওয়া এবং যান ও জন চলাচলে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নিরাপত্তার জন্য সমাবেশে আগতদের চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।

২। দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও সমাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ, রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান ও প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

৩। সমাবেশে আসা-যাওয়অর পথে শোভাযাত্রা ও মিছিল করাসহ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এরূপ কার্মকান্ড করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ও পতাকাতে কোনো লাঠি-সোঠা ও রড ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করতে হবে।

৪। আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

৫। আগামী ০৩/১২/২০২২ তারিখ সমাবেশ শুরুর পূর্বে সমাবেশস্থলে প্রবেশ কিংবা অবস্থান করতে পারবে না। সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম ঐদিন ১৪.০০ ঘটিকায় শুরু করে ১৭.০০ ঘটিকায় শেষ করতে হবে। সমাগত নেতাকর্মীরা যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বা আয়োজকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।

৬। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। সমাবেশস্থলের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর/মাইক/সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না। সমাবেশস্থলে ইন্টারনেট সংযোগ, ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করা যাবে না।

৭। যানবাহনসমূহ শহরের ভেতরে প্রবেশ করানো যাবে না। রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশের কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকতে হবে। পার্কিং এর জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে। মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।

৮। এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

এদিকে, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলায় দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার করে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে এ দাবি জানান তারা।

মহানগরীর মালোপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশ কমিটির সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত রাতেই অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শতাধিক মামলা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সমাবেশে যেন নেতাকর্মীরা আসতে না পারে সে জন্য ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। ধর্মঘটের কারণে আগে থেকেই সমাবেশে আসতে চাইলে নেতকার্মীদের থাকার ব্যবস্থা করতে দেয়া হচ্ছে না। এর পরও যে কোন মূল্যে এই সমাবেশ সফল করা হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, বিএনপির নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিবষয়ক সম্পাদক ও রাসিকের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পূনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন প্রমূখ।

এনএ



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top