নগরীতে 'ধারালো অস্ত্র' নিয়ে দুর্ধর্ষ চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৪; আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:১০

সংগৃহিত
রাজশাহীতে গভীর রাতে ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এক স্কোয়াড্রন লিডারের (মেজর) বাসাবাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার মা এবং ভাতিজাকে অবরুদ্ধ করে রেখে ল্যাপটপ ও ব্যাংকের চেকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তারা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত পৌনে তিনটার দিকে নগরীর সপুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
 
বিমানবাহিনীর ওই কর্মকর্তার নাম মাহফুজুর রহমান। তিনি স্কোয়াড্রন লিডার (মেজর) হিসেবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে চট্টগ্রামে কর্মরত রয়েছেন। ঘটনার সময় তার মা মোছা. মুর্শেদা খাতুন এবং ভাতিজা আমানুল্লাহ আমান বাসায় ছিলেন। তার মা মুর্শেদা খাতুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত এবং ভাতিজা আমানুল্লাহ আমান সাংবাদিকতা করেন।
 
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর সপুরা এলাকায় বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। এ ঘটনায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাতে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটির এজহারে রাবির সহকারী রেজিস্ট্রার মোছা. মুর্শেদা খাতুন উল্লেখ করেন, 'বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টা ৫৫ মিনিটে আমার নাতির ঘুম ভাঙে। তিনি আমার রুমে একজনকে দেখতে পান এবং চোর বলে চিৎকার দেন। তখন ওই ব্যক্তি আমার ঘর থেকে দৌঁড়িয়ে বের হয়। ডাইনিংয়ে রাখা আমাদের বাসার চাবিটি আগেই সে নিয়েছিল। ঘর থেকে বের হয়ে ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে আমাদের অবরুদ্ধ করে। আর চাবি দিয়ে বাসার নিচতলায় মেইন দরজা খুলে পালিয়ে যায়। বাসার বাইরে নিচে তার আরও সহযোগী ছিল। এ সময় একটি ল্যাপটপ, দুটি ব্যাগ, নগদ টাকা ও দুটি চেক বইসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জিনিসপত্র তারা চুরি করে নিয়ে যায়। আতঙ্কিত অবস্থায় আমরা ড্রয়িং রুমে টেবিলের ড্রয়ার ও নানা কাগজপত্র এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখি। টেবিলের ওপর একটি ধারালো বটিও (হাসুয়া) রাখা ছিল৷ আমরা অবরুদ্ধ অবস্থায় ৯৯৯-এ কল করি এবং বোয়ালিয়া থানার পুলিশকেও জানাই। এরপর পুলিশ এসে বাইরে থেকে গেট খুলে আমাদের উদ্ধার করে।'
 
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোছা. মুর্শেদা খাতুন বলেন, 'এটা চুরি মনে হলেও দুর্বৃত্তরা দুর্ধর্ষভাবে ডাকাতি স্টাইলে ঘটনাটি ঘটিয়েছি। প্রথমে রান্নাঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে সেখান দিয়ে ভেতরে ঢুকে। তার কাছে ধারালো অস্ত্র ছিল। এছাড়া টেবিলের ওপর বাসার সবজি-তরকারি কাটা বটি (হাসুয়া) রেখেছিল সে, যাতে আমরা দেখে ফেললে বা ঘুম ভাঙলে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে পারে। প্রথমে ড্রয়িং রুম থেকে ল্যাপটপ এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। এরপর আমার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে। তবে আমাদের ঘুম ভাঙলে আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে গেটের তালা খুলে নিচে যায়। এটা হত্যা করার উদ্দেশ্যই ছিল দুর্বৃত্তদের। দ্রুত পুলিশ না আসলে আরও বড় ধরণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হত। হয়ত আমাকে ও আমার নাতিকে মেরেই ফেলত। আমি এই দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীদের দ্রুত সময়ে গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।'
 
এ ব্যাপারে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাতে একটা মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। চুরির মালামাল উদ্ধার ও অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top