বাঘায় দেদারছে চলছে পুকুর খনন

বাঘা প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২১ ০১:৫৬; আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ২১:৪০

পুকুর খনন

 

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন চলছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এসব জমিতে কৃষকেরা বিভিন্ন ফসল ফলাতেন। পুকুর খননের ফলে কৃষি আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের মাঝপাড়া, দিঘার চুনির বিল, কামারপাড়া বিল, পীরগাছা ও মনিগ্রাম ইউনিয়নের হেলালপুর, কলাবাড়িয়া, হাবাসপুর এবং বাজুবাঘা ইউনিয়নের হিজলপল্লী, বারখাদিয়া, নওটিকা এলাকায় ভেকু দিয়ে কৃষি জমি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে।

এসব এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য পুকুর খনন করা হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বিলে বিভিন্ন ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। পুকুর খননে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০ হাজার বিঘা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে পুকুর কাটার কারনে শত শত বিঘা জমিতে রোপন করা আম গাছ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

গত ৩-৪ বছর ধরে পুকুর খননের কারণে এলাকার কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেন না। যেসব জমিতে বিগত সময়ে এক বছরে তিন ধরনের ফসল উৎপাদন হতো। বর্তমানে কোনো মৌসুমে ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষকরা। 
বাউসা গ্রামের রতন কুমার, বারখাদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম, জোতরাঘব গ্রামের চঞ্চল মাহমুদ জানান, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন বিলগুলোতে যেভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে, আগামী দুই/তিন বছরের মধ্যে আর কোনো ফসলি জমি থাকবে না।

কৃষকেরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমের জন্য পদ্মা নদীর সঙ্গে ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা দরকার। পুকুর খননের কারনে অনেক সমস্যায় পড়ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। আশঙ্কাজনকহারে কমছে ফসলি জমি।
মনিগ্রাম ইউনিয়নের হাবাসপুর গ্রামের অসিত কুমার জানান, আমার আগের পুকুর মেরামত করেছি। তবে ইতিমধ্যে সেটা কাটা হয়ে গেছে। নতুন করে কোনো পুকুর খনন করা হচ্ছে না।  তবে, স্থানীয়দের দাবি- তিনি নতুনভাবে ১১ বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খননের কাজ করছেন।
এদিকে, তেথুলিয়া গ্রামের অচিত তলা বিলে পুকুর খননকারি জামাল উদ্দিন বলেন, আমার নিচু জমিতে ফসল হয় না। তাই পুকুর খনন করছি। ভেকু না পাওয়ার কারনে চার বিঘার মধ্যে একটি মাত্র পাড় বাধা হয়েছে।

পুকুর খননের বিষয়ে বাউসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক বলেন, পুকুর খনন চলছে শুনেছি। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পুকুর খনের বিষয়টি জেনেছি। আগামী মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপনা করা হবে।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, যেখানে পুকুর খনন হচ্ছে, সেখানে গিয়ে অভিযান চালিয়ে ভেকু সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে সকল এলাকায় আরো নতুনভাবে পুকুর খনন চলছে, সেই এলাকায় অভিযান চালানো হবে এবং পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

এসকে




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top