মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভোগাচ্ছে বাগমারার ২৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২০ ১৯:১২; আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০০:০০

ফাইল ছবি

বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বেহাল দশা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার। এমন স্থিমিত পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে রাজশাহীর বাগামারা উপজেলায়।

করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে উপজেলার প্রায় ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এদিকে এসব কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সৃষ্ট হয়েছে নানান জটিলতা। করোনাকাল দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ, সংস্কার ও শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন-ভাতার আবেদন পাঠানোসংক্রান্ত কোনো দায়িত্বই ঠিকমতো করতে পারেনি এসব কমিটি।

প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক দাপ্তরিক কাজ সম্পাদিত হতে না পারায় নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়েছে। এখন নানা দাপ্তরিক কাজেও সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাঘাত।

করোনাকালেই দুটি ডিগ্রি কলেজসহ ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছ উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে।

নতুন কমিটি গঠনে রয়েছে নানা প্রক্রিয়া। ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে করা হয়েছে অস্থায়ী কমিটি।বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির নিয়মানুযায়ী, দুই বছর মেয়াদি কমিটি শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। নির্বাচন পরিচালনা জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। করোনাকাল চলায় এসব প্রক্রিয়াও শুরু করা যায়নি। যদিও করোনাকালের ছুটি শেষ হয়ে আসায় ও সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরুর পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

শিক্ষক ও কর্মকর্তারা শুধুমাত্র বেতন তুলতে পারলে ও থমকে আছে নানা আর্থিক কার্যকম। কমিটি না থাকায় উচ্চতর বেতনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো যায়নি।

মেয়াদোত্তীর্ণের বিষয় স্বীকার করে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আটজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধান বলেন, করোনার কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাঁরা নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেননি। ছয় থেকে সাত মাস কমিটি না থাকায় প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম থমকে আছে। প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষরে কেবল মাসিক বেতন দাখিল ও উত্তোলনের কাজ চলছে।

অচল এ অবস্থায় সবেচেয়ে ভুক্তভোগী হলেন শিক্ষকরা। নতুন কমিটি না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ, সংস্কার, শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন–ভাতার আবেদন পাঠানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া জরুরি কোনো সিদ্ধান্তও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সবই ঢিমেতালে চলায় দুর্ভোগ বাড়ছে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী তিনজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, কমিটি না থাকায় তাঁদের উচ্চতর বেতনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো যায়নি। এ কারণে তাঁরা আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের কোন কাজ করতে না পারার কথা জানান বাগমারা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জিয়াউল আলম। তিনি বলেন, করোনাকালে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ইউএনওর স্বাক্ষরে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন–ভাতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে অন্য কাজ করা যাচ্ছে না। নতুন কমিটির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

অস্থায়ী কমিটি দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে চাঁইপাড়া উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠানে কোন কমিটি না থাকায় অস্থায়ী কমিটি করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানসমূহের এমন অবস্থার বিষয়ে সার্বিকভাবে কথা বলা হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম মাহমুদ হাসানের সাথে। তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি বা কমিটির মেয়াদ না থাকলে উন্নয়ন, অর্থ ব্যয় ও দাপ্তরিক কাজ করা যায় না। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • খবর-প্রথম আলো
    এসএইচ


বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top