আজ মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২২ ০৩:৪৯; আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০২

মহিমান্বিত ও বরকতময় রজনী পবিত্র লাইলাতুল কদর আজ। ২৬ রমজান দিবাগত রাতকে লাইলাতুল কদর হিসেবে পালন করা হয়। পুণ্যময় এই রাত আসে রোজাদার বান্দার জন্য একদিকে আনন্দের ও অন্য দিকে আল্লাহর রেজামন্দি হাসিলের অনাবিল এক বার্তা নিয়ে। এই রাতে কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও নফল নামাজ আদায় করে কাটান ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ওপর মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়েছে। পবিত্র এই রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। অর্জন করতে পারি তার অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফেরাত। এই রাতে মুসলমানরা নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে গুজরান করবেন।

২৬ রমজান রাতকে লাইলাতুল কদর হিসেবে পালন করা হলেও ইসলামের বিধানে নির্দেশ রয়েছে রমজানের শেষ দশ দিনের বেজাড় রাতে এই মহিমান্বিত রজনীকে তালাশ করার। সেই সূত্রে ২১. ২৩.২৫, ২৯ রমজানের রাতও লাইলাতুল কদরের মর্যাদাসম্পন্ন। অধিকাংশ ধর্মবেত্তা ও আলেমগণ ২৭ রমজানের রাত অর্থাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাতকেই পুণ্যময় এই রাত হতে পারে বলে মত দিয়েছেন। সেই মতে লাইলাতুল কদর এই রাতে পালনের রেওয়াজ চলে আসছে। তবে বেজোড় রাত গুলোকেও ইবাদত বন্দেগীতে কাটানোর তাগিদ আছে, যাতে মহিমান্বিত এই রাতের সওয়াব থেকে কেউ বঞ্চিত না হয়।

বলা হয়, এই রাতে প্রথম আসমানে এসে বান্দার ডাকের অপেক্ষায় থাকেন মহান আল্লাহ। তিনি জানতে চান কারা আল্লাহর কাছে সাহায্য, রহমত ও নাজাত চায়। বরকতময় এই রাত নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত ও আল্লাহকে ডাকার মাধ্যমে মুসলমানদের পাপমুক্তির বড় সুযোগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে শবে কদরের রজনী। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর পরিবেশে সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র শবে কদর। মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন সকলে। ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর পালন শেষ হবে। যারা এশা ও ফজর জামাতের সাথে আদায় করবেন তাদের আমলনামায় সারা রাত ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে। ফলে অনেকেই এই রাত না ঘুমিয়ে নফল ইবাদতের মাধ্যমে কাটিয়ে দেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা লাইলাতুল কদরের রাতকে আরেক কারণে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে, হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। আর লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব এ কারণে বেশি যে, মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন নাজিল হয়েছিল পবিত্র শবে কদরের রাতে। এই পবিত্র কোরআন মানুষের জন্য এসেছে বরকতময় এক তোহফা হিসেবে। ইসলামের বিধিবিধান ও সকল জ্ঞানের উৎস হিসেবে এই গ্রন্থ মানুষকে সুপথ দেখিয়ে চলেছে। তাই মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পবিত্র কর্তব্য।

পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় মসজিদ ছাড়াও দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে। পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওসমূহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। এছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top