মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা ও সমাধান

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:১২; আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:০৪

ছবি: প্রতীকী

মোবাইলের নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়েননি এমন মোবাইল ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া যায় না। কোনো না কোনো সময়ে মোবাইলের নেটওয়ার্কের ঝামেলায় পড়তে হয়। অনেক সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়। অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইলের গুরুত্ব নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ এমনটা হয় যে, আপনি কাউকে ফোন করবেন কিন্তু আপনার মোবাইল নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না কিংবা আপনি ভালোমতো যোগাযোগ করতে পারছেন না কারণ নেটওয়ার্ক সমস্যায় ফোনের লাইন বারবার কেটে যাচ্ছে।

আগের তুলনায় মোবাইল এখন আমাদের আরও বেশি সংস্পর্শে থাকে। মোবাইল এবং নেটওয়ার্ক নিয়ে আপনি যতটা খুশি থাকেন, সবসময় কিন্তু তা ততটা ভালো কাজ নাও করতে পারে।

আপনার মোবাইল রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে একটি মোবাইল টাওয়ারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, যা একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্য টাওয়ারে প্রেরণ করে এবং অন্য একটি ফোনও একইভাবে সংযুক্ত হয়। মূলত মোবাইল টাওয়ারগুলো সমান দূরত্বে হওয়ার কথা, যাতে ফোনের ট্রান্সমিশন রেঞ্জের মধ্যে সহজেই হয় এবং তা নিখুঁত হারিকম্ব কাঠামোর- কিন্তু তা সবক্ষেত্রে হয় না।

মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করা হয় যেখানে সবচেয়ে বেশি বাস্তবিক এবং ব্যবসায়িক সুবিধা রয়েছে সেখানে। শহরাঞ্চলে কাছাকাছি অনেক টাওয়ার থাকে কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এর দূরত্ব অনেক বেশি থাকে। টাওয়ার থেকে আপনি যতদূরে অবস্থান করবেন, নেটওয়ার্ক তত দুর্বল থাকবে।

জনসংখ্যার ঘনত্ব অবশ্যই একটা বড় ফ্যাক্টর কিন্তু তারপর কঠিন ভূখন্ডের ওপর টাওয়ার স্থাপন অতিরিক্ত খরচের ব্যাপার থাকে এবং নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি এলাকায় একটি কুদর্শন মোবাইল টাওয়ার স্থাপন প্রায়ই নিষিদ্ধ করা হয়।

স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী, আপনি অন্য মানুষ থেকে যতটা দূরত্বে অবস্থান করবেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক সে ক্ষেত্রে দুর্বল হবে। পাহাড়-পর্বত, ভবন এমনকি গাছও অনেক সময় নেটওয়ার্ক সংকেতের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং আপনাকে যদি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হয়, তাহলে জেনে নিন আপনার কী করা উচিত।

মোবাইল বন্ধ করে আবার চালু করুন: যদি মাত্র একবার নেটওয়ার্ক সমস্যার মুখোমুখি হোন, তাহলে মোবাইল বন্ধ করে আবার চালু করাটা এর সমাধান হতে পারে। বন্ধ করে আবার চালু করার ফলে মোবাইল আরেকটি টাওয়ার থেকে সংযোগের জন্য চেষ্টা করতে পারে এবং হতে পারে সেটা আরও শক্তিশালী সিগন্যাল। এ ছাড়া এয়ারপেস্নন মোড চালু করে আবার বন্ধ করার মাধ্যমেও একই সমাধান হতে পারে। কিন্তু ফোনে অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তা কল করার জন্য বাধা হয়ে থাকতেই পারে।

মোবাইল চার্জ দিন: আপনার ফোনের চার্জ যদি কম থাকে এবং পাওয়ার সেভিং অপশনটি যদি সক্রিয় থাকে, তাহলে ফোন নেটওয়ার্ক প্রেরণের ক্ষেত্রে এটি কম শক্তির থাকে। সুতরাং মোবাইল চার্জ দিন অথবা যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পাওয়ার সেভিং অপশনটি বন্ধ রাখুন। তবে পাওয়ার সেভিং বন্ধ থাকলে কিন্তু ব্যাটারি চার্জ দ্রম্নত শেষ হবে।

স্থান সামান্য পরিবর্তন করুন: মোবাইল আপনি কীভাবে ধরেছেন, তার কারণেও সমস্যা হতে পারে। অর্থাৎ মোবাইলের এন্টেনা যদি আপনার হাতে ঢাকা পড়ে থাকে, তাহলে নেটওয়ার্ক দুর্বল হবে। তাই মোবাইল যেভাবে ধরেছেন তা পরিবর্তন করে দেখতে পারেন। কারণ এন্টেনায় হাত থাকাটা যদি সমস্যার কারণ হয়ে থাকে তাহলে এন্টেনা মোবাইলের কোথায় আছে তা খুঁজে বের করাটা হয়তো আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়া আপনি যদি রুমে থাকেন, তাহলে বাইরে বের হওয়াটাও সমাধান হতে পারে। কারণ অনেক সময় দেয়াল এবং ভবনের ছাদের কারণেও নেওয়ার্ক দুর্বল হতে পারে। সুতরাং রুম থেকে বেরিয়ে কিংবা রুমের জানালা খোলার মাধ্যমেও নেটওয়ার্ক পাওয়াটা সহায়ক হতে পারে।

অনেক সময় কোনো দিকে শুধু কয়েক ফুট হাঁটার মাধ্যমেও নেটওয়ার্কের উন্নতি হতে পারে। কারণ প্রতিফলিত নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে সমস্যা হতে পারে। অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের প্রভাবেও মোবাইল নেটওয়ার্ক বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। যদি নেটওয়ার্ক বাধাপ্রাপ্তর কোনো সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে না পান, তাহলে পায়চারির মাধ্যমে নেটওয়ার্কের উন্নতি দেখতে পারেন।

স্থান অনেক বেশি পরিবর্তন করুন: আপনি মোবাইল টাওয়ার থেকে অনেক দূরে অবস্থানের কারণেও ভালো নেটওয়ার্ক পেতে পারেন। আপনি যদি রাস্তায় থাকেন, তাহলে সবচেয়ে ভালো বিকল্প উপায় হচ্ছে, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার ফোন করার চেষ্টা করুন। কিন্তু আপনি এমন কোথাও আছেন যে, মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না, তাহলে জনসংখ্যা বেশি রয়েছে এমন জায়গায় চলে যান কিংবা উঁচু কোনো স্থান সমাধান হতে পারে।

আপনি যদি কাছাকাছি মোবাইল টাওয়ার দেখতে পান, তারপরও মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল হতে পারে। এটা এ কারণে যে সেলুলার ট্রান্সমিটার প্রায়ই একাভিমুখী হয়। সুতরাং টাওয়ার চারপাশে একটি বৃত্তের মধ্যে হাঁটা শুরু করুন এবং অবশেষে আপনি হয়তো সঠিক মুখীতে নেটওয়ার্ক পেয়ে যেতে পারেন। তবে এটা মেনে চলাটা সময় নষ্টের কারণ হতে পারে কারণ সব টাওয়ার একই ক্যাটাগরির নয়।

ভালো মোবাইল ব্যবহার করুন: এত সবকিছুর পরও যদি আপনার মোবাইলে দুর্বল নেটওয়ার্ক থাকে, তাহলে হতে পারে আপনার মোবাইলের সমস্যা। ভালো নেটওয়ার্ক আছে এমন জায়গাতেও আপনার মোবাইলের এন্টেনার মান পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে। যেখানে অন্য সবাই ভালো নেটওয়ার্ক পাচ্ছে, সেখানে আপনি যদি বরাবরই দুর্বল নেটওয়ার্কের সমস্যার মুখোমুখি হোন, তাহলে সময় এসেছে আপনার মোবাইলটি বদলে ফেলার।

ভালো টেলিকম সংযোগ ব্যবহার করুন: আপনার ফোনে যদি সমস্যা না থাকে, তাহলে হতে পারে তা টেলিকম অপারেটরের সমস্যা। কারণ এটা হতে পারে যে আপনি যেখানে বাস করেন কিংবা কাজ করেন, সেখানে আপনার টেলিকম অপারেটরের নেটওয়ার্ক কাভারেজ ভালো না। যদি দেখেন যে অন্যান্য মানুষও একই টেলিকম অপারেটরের সংযোগ ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়ছেন; কিন্তু ভিন্ন অপারেটরের সংযোগ ব্যবহার করে সমস্যায় পড়ছেন না, তাহলে টেলিকম অপারেটরের বদলানোর সময় হয়েছে আপনার।

ওয়াইফাই কলিং করুন: অবশ্যই সব পরিবেশে এই উপায় খাটবে না কিন্তু যখন আপনি ওয়াইফাই সুবিধার মধ্যে রয়েছেন এবং ফোন নেটওয়ার্ক যদি দুর্বল থাকে তাহলে ওয়াইফাই প্রযুক্তির আওতায় ফোন কলিং করতে পারেন। প্রায় সব স্মার্টফোনই এখন ওয়াইফাই সমর্থিত এবং বিভিন্ন কলিং অ্যাপ রয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top