পাবনা মানসিক হাসপাতাল লোকবল সংকট

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২ ০৪:৩৯; আপডেট: ১৬ জুন ২০২২ ০৪:৫৫

ছবি: সংগৃহীত

‘পাবনা মানসিক হাসপাতাল’ দেশের মানসিক রোগের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদ শূন্য। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে আরোগ্য প্রত্যাশীদের চিকিৎসা সেবা। লোকবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বার বার জানিয়েও আশানুরূপ ফল মেলেনি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ রতন কুমার পাল।

ডাঃ রতন কুমার বলেন, এই হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুমোদিত ৩০টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১০জন চিকিৎসক। চিকিৎসক,প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, নার্স,চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে শুরু করে সুইপার পর্যন্ত কোনো পদেই চাহিদা অনুযায়ী লোকবল নেই। (এ হিসাব চলতি বছরের ১৫জুন বিকাল পর্যন্ত)।

এই সংকট সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যও। তবে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেসব সমস্যার সমাধান মেলেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় সংকট নিরসনের আশ্বাসে মানসিক হাসপাতালের সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রস্তাবনা তৈরী শুরু করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স।

সম্প্রতি রবিবার (১২ জুন) দুপুরে হাসপাতালে মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এক জরুরী বৈঠকে হাসপাতালে চলমান নানা সংকট সম্পর্কে অবহিত হন সংসদ সদস্য প্রিন্স।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ রতন কুমার পাল ইত্তেফাককে জানান, মানসিক হাসপাতালে সব সময়ই রোগীর চাপ থাকে। কিন্তু এখানে ৩১ জন ডাক্তারের পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১০ জন। মঞ্জুরীকৃত পদের ৬৪৩ পদের ১৬৮ পদ শূন্য।

বিশেষায়িত হাসপাতাল হলেও চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক, আবাসিক সাইক্রিয়াটিস্ট, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও), অ্যানেসথেটিস্ট, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, বায়োক্যামিস্ট, ডেন্টাল সার্জন, অকুপেশন থেরাপিস্ট,এসএলপিপির মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসক ছাড়াই চলছে এ হাসপাতাল। সহকারী নার্স ৭০জনের মধ্যে ১৪জনই নেই। ফলে জনবলের অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা। অবকাঠামোগত উন্নয়নও প্রয়োজন। রোগীর চাপ অনুপাতে শয্যা সংখ্যা কমপক্ষে ১০০০ এ উন্নীত করা প্রয়োজন।শুধু তাই নয়, ৫০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য অনুমোদন রয়েছে মাত্র ২০০ শয্যার হাসপাতালের জনবল। ২০০ শয্যার জনবলের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী পদেও একই অবস্থা।

সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স এই প্রতিনিধিকে বলেন, মানসিক হাসপাতাল পাবনার গর্বের প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে রোগীর অনুপাতে চিকিৎসক একদমই অপ্রতুল। অবকাঠামোগত ঘাটতিও রয়েছে। সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে তিনি সংসদে ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন। খুব শীঘ্রই এগুলো সমাধান হবে বলে আশা করছেন।

১৯৫৭ সালে পাবনার সাবেক সিভিল সার্জন মোহাম্মদ হোসেন গাঙ্গুলি ‘শীতলাই হাউজ’ নামক জমিদার বাড়িতে অস্থায়ীভাবে মানসিক হাসপাতাল স্থাপন করেন। ১৯৫৯ সালে জেলা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে হেমায়েতপুরে ১১২দশমিক ২৫ একরের একটি চত্বরে হাসপাতালটি স্থানান্তরিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে শয্যা সংখ্যা ছিল ৬০। ১৯৫৯ সালে ২০০, ১৯৬৬ সালে ৪০০ এবং ২০০০ সালে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। মোট শয্যার ২৮০টি নন-পেয়িং এবং ১২০টি পেয়িং আর প্রকল্পর অধীনে ১০০ শয্যা রয়েছে। হাসপাতালের মোট ১৮টি ওয়াডের্র মধ্যে পুরুষদের জন্য ১৩ (১১টি নন-পেয়িং, দুটি পেয়িং) এবং নারীদের জন্য পাঁচটি (চারটি নন-পেয়িং, একটি পেয়িং) নির্দিষ্ট। তবে প্রতিষ্ঠার অর্ধ শতাব্দী পর জনসংখ্যা ও মানসিক রোগী আশংকাজনক হারে বাড়লেও সে অনুপাতে বাড়েনি হাসপাতালের শয্যা এবং চিকিৎসকের পদ।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top