ফ্লয়েড হত্যায় ডেরেক চৌভিন দোষী সাব্যস্ত, ৪০ বছর জেল হতে পারে

রাজটাইমস ডেক্স | প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২১ ১০:২৯; আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৪০

জর্জ ফ্লয়েড

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়েছে। ফলে চৌভিন ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পেতে পারেন।


মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএনের খবরে আজ এ কথা জানানো হয়। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে গত বছরের মে মাসে ডেরেক চৌভিনের হাতে নিহত হন জর্জ ফ্লয়েড। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। একপর্যায়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ শিরোনামে এ আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়।


সিএনএনের খবরে বলা হয়, মিনেসোটার হেনেপিন কাউন্টি আদালত তিনটি অভিযোগেই ডেরেক চৌভিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এগুলো ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুন, ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুন এবং ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ নরহত্যা। আইন অনুযায়ী ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুনের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের জন্য সর্বোচ্চ কারাদণ্ড হয় ২৫ বছরের। অন্যদিকে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ নরহত্যার দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার ডলার জরিমানা।

আদালত রায় ঘোষণার সময় জানিয়েছেন পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে চৌভিনের কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হবে।


দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণার সময় ডেরেক চৌভিনকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আদালত রায় ঘোষণার পর তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণার পর আদালত এলাকায় উল।লাস প্রকাশ করেন অনেকে
রায় ঘোষণার পরপর আদালতের বাইরে থাকা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকারীরা উল্লাস প্রকাশ করেন। ন্যায়বিচার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
বহুল আলোচিত এই মামলার রায়কে ঘিরে বেশ কয়েক দিন ধরেই আদালত এলাকাসহ মিনেসোটার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এই রায়কে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর-নগরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হতে পারে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।

এই রায়ের পর এক টুইট বার্তায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি লিখেছেন, বিচারকেরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আরও বেশি কিছু প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় নাগরিক আন্দোলন শুরু হয় জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর। শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ-নৃশংসতার অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় নগরীতে পুলিশে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশি ব্যবস্থার জন্য রাজস্ব ব্যয় কমিয়ে আনা হয়। আমেরিকার পুলিশ ইউনিয়নগুলোর মধ্যে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ চলছে।


মার্কিন সমাজ ও পুলিশি ব্যবস্থায় জমে থাকা বিদ্বেষমূলক মনোভাবের বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলনের সংগঠনগুলো এখনো প্রতিবাদমুখর। গত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারসহ নানা ধরনের নাগরিক আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হয়। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমেরিকায় বেশ কিছু বর্ণবিদ্বেষমূলক হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ লোকজনের মৃত্যু হয়। এসব কারণে এ মামলার রায় স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top