এসএসসি পাস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গ্রেফতার

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:০৫; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪৪

ছবি : সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে এসএসসি পাসেই এফসিপিএস (মেডিসিন) বনে যাওয়া এক ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত ভুয়া চিকিৎসকের নাম আব্দুল করিম লোহানী (৫৭)।

গত ৩২ বছর ধরে অন্য চিকিৎসকের সনদের ফটোকপি ব্যবহার করে তিনি এভাবে মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে। তিনি উপজেলার চকপাড়া গ্রামের মৃত বাহাজ উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল জাহাঙ্গীর হাসপাতাল থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর ভুয়া চিকিৎসকের অপারেশনে সোমবার সকালে এক নবজাতকের মৃত্যুসহ একাধিক অভিযোগে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম বলেন, সোমবার সকালে ওই ভুয়া চিকিৎসক জোনাইল ইউনিয়নের কুশমাইল গ্রামের লিয়াকত আলীর স্ত্রী মুক্তি খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় তিনি নিজেই ওই রোগীর এনেসথেসিয়াও করেন। অপারেশনের ঘণ্টা দুয়েক পরই শিশুটি মারা যায়। এরপর সিজারের দায়িত্বরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজনরা। বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যার পর হাসপাতালে গিয়ে তাকে আরেকটি সিজারিয়ান অপারেশন করা অবস্থায় পাওয়া যায়। এর পর তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে এফসিপিএস (মেডিসিন) এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ১৭তম ব্যাচের এমবিবিএস বলে পরিচয় দেন। তবে হাসপাতালের প্যাড ও লিফলেটে তার নামের সঙ্গে এমবিবিএস (রাজ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), পিজিটি (সার্জারী, গাইনী এন্ড অবস) এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন জেনারেল সার্জন পদবি লেখা রয়েছে। তার পরস্পরবিরোধী তথ্যে সন্দেহ হলে তদন্তে নেমে তার দেয়া সব তথ্যই ভুয়া বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে তিনি অন্যের সনদপত্রের ফটোকপি ব্যবহার করে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।

তিনি আরো বলেন, ওই ভুয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটি এর আগেও বন্ধ করা হয়েছিল। তবে লাইসেন্সভুক্ত হাসপাতাল হওয়ায় কিছু শর্তসাপেক্ষে আবার চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবার ওই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আব্দুল করিম ১৯৮৩ সালে বড়াইগ্রাম পাইলট হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে সেনাবাহিনীতে সিপাহী পদে যোগ দেন। কিছুদিন পর ছুটিতে বাড়ি এসে ম্যাজিস্ট্রেট সেজে ঢুকে পড়েন এসএসসি পরীক্ষার হলে। সাথে সাথে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট প্রমাণিত হওয়ায় তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে মামলার আসামি হন। সেই মামলায় তিনি দুই বছরের মাথায় সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।

তবে জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি ভুয়া চিকিৎসক এটা আমার জানা ছিল না। তিনি চিকিৎসক হিসাবে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন বলেই তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছিলাম।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, চিকিৎসক না হয়েও ভুয়া পরিচয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগে তার নামে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top