আমানতে সুদের হার বাড়িয়েছে অধিকাংশ এনবিএফআই

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৩; আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৩

ছবি: সংগৃহিত

দেশে মূল্যস্ফীতি ও তারল্য সংকটের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) আমানতে (ডিপোজিট) সুদের হার বাড়িয়েছে। খবর টিবিএসের।

এনবিএফআই সূত্র জানিয়েছে, আমানতের সুদের হার নির্ধারিত ৭% থেকে বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে মৌখিক সম্মতি পেয়েছে তারা।

চলতি বছরের জুলাইতে আমানত ও ঋণে সুদের হার ৭% ও ১১% নির্ধারণ করা হয়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৯% এর বেশি হওয়ায় গ্রাহকদের কাছে থেকে ৭% সুদে আমানত সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

এ অবস্থায় অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনধি দল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করে নির্ধারিত হার তুলে নেওয়ার দাবি জানান।

পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মৌখিকভাবে তাদের আমানতের সুদ নির্ধারির হার থেকে বাড়ানোর অনুমতি দেন। তবে এ হার ৮% এর মধ্যে রাখার জন্য বলা হয়।

তবে ইতোমধ্যেই এ হার ৮% এর বেশি বলছে এনবিএফআইগুলো।

আমানতে সুদের হার বাড়াতে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "এনবিএফআই'র নিয়মিত আমানত সংগ্রহের সুযোগ অনেক সীমিত, সে তুলনায় ব্যাংকের সে সুযোগটা অনেক বেশি। এ কারণে তাদের একটু রিলাক্সে রাখা দরকার। সেদিক থেকে দেখতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তটি রেশনাল।

"কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেটে ক্যাপ দেওয়ার কোনো যুক্তি আমি দেখি না। এটা কোনো সুফল দিচ্ছে বলে আমার মনে হয় না।"

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসএমই খাতে রিফাইন্যান্সিং করার ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর টিবিএসকে বলেন, সরকারের উচিত সুদের হারের সীমা প্রত্যাহার করে নেওয়া।

"এটিই এখন প্রয়োজন। এই পুরো পলিসিটাই ভুল। এখন সেটি কার্যকরও না।

"বাস্তবতা হচ্ছে, ক্যাপগুলো তুলে দেওয়া উচিত। এটা সেন্ট্রাল ব্যাংক করতে পারছে না বলেই এ ধরণের আনঅফিশিয়াল এপ্রোচে যাচ্ছে। হাতের ইশারা বা চোখের ইশারা দিয়ে তো ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেম চালানো উচিত না।"

"আমাদের একটি নিয়মভিত্তিক সিস্টেমে চলা উচিত," যোগ করেন তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগস্টের তথ্য বলছে, দেশে কার্যরত ২৯টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৫টি প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফিশিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী ডিপোজিট সংগ্রহে সুদের হার ৭% এর নিচে রেখেছে। এই ৫টি প্রতিষ্ঠান হলো- ডিবিএইচ ফিন্যান্স পিএলসি, আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেড, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেড। বাকি ২৪টি প্রতিষ্ঠানের হারই এরচেয়ে বেশি।

আমানতের ওপর ৮% এর বেশি সুদ দিয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠান। অন্তত ৯টি প্রতিষ্ঠান যে হারে আমানত সংগ্রহ করছে, ঋণ দিচ্ছে তারচেয়ে কম হারে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদ আয় ঋণাত্মক হচ্ছে।

এ ছাড়া ঋণে ১১ শতাংশের বেশি হারে সুদ নিয়েছে আভিভা ফিন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং সিভিসি ফিন্যান্স।

নিউজের লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top