ডলার সংকটে ভারত সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:১৮; আপডেট: ৪ মে ২০২৪ ০৭:৫৪

ছবি: সংগৃহিত

দেশে ডলার সংকট পরিস্থিতিতে ভারতীয় সীমান্তে চোরাচালান বেড়েছে। এলসি খুলতে শর্তের মারপ্যাচে ব্যবসায়ীরা ভারতের সাথে অনানুষ্ঠানিক লেনদেনের সাথে ঝুঁকছেন। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় নানা বাণিজ্যিক সুবিধায় অবৈধ লেনদেন কমে আসলেও সাম্প্রতিক সময়ে আবারো বেড়েছে এমন লেনদেন। খবর বণিক বার্তার।

দীর্ঘ সীমান্ত ও সাংস্কৃতিক নৈকট্যের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অত্যন্ত জোরালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। একসময় দুই দেশে পণ্য আমদানি-রফতানির বড় একটি অংশ ছিল অনানুষ্ঠানিক। তবে গত এক দশকে একাধিক বাণিজ্য চুক্তি সই, আমদানি-রফতানি সহজীকরণ, শুল্ক বাধা দূর করা, দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের সতর্ক প্রহরা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হওয়ায় সীমান্তকেন্দ্রিক অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অনেকটাই কমে এসেছিল। এর বিপরীতে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশিতে। ২০১০-১১ অর্থবছরেও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের মোট আকার ছিল ৫ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তকেন্দ্রিক অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিমাণ এখন আবারো বাড়তে শুরু করছে।

বাংলাদেশ ও ভারতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চোরাচালানির মাধ্যমে সীমান্ত পার হয়ে দুই দেশেই প্রবেশ করছে প্রচলিত ও নিষিদ্ধ নানা ধরনের পণ্য। এ তালিকায় চাল, পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্য যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিস্ফোরক ও মাদকের মতো নিষিদ্ধ পণ্যও। ভারত থেকে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে গবাদিপশু, মাদক, কসমেটিকস, শাড়ি ইত্যাদি দ্রব্য। আবার বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে তুলা, কাপড়, চামড়া, স্বর্ণ, মাছ, ইলেকট্রনিকস ও কম্পিউটার পার্টস, সার, জ্বালানি ও ভোজ্যতেলের মতো পণ্য। বিশেষ করে সম্প্রতি স্বর্ণ চোরাচালানের মাত্রা অনেকটাই বেড়েছে।


দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ অংশীদার প্রতিবেশী ভারত। আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য আমদানির উৎস ও রফতানির গন্তব্য হিসেবে দেশের বাণিজ্য খাতে শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় অবস্থান করছে দেশটি। কিন্তু এখন দুই দেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের কলেবরও বড় হতে দেখা যাচ্ছে। সীমান্তরক্ষীসহ দেশের নিরাপত্তা খাতসংশ্লিষ্টদের ভাষ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সঙ্গে কিছু অংশ বাদ দিলে দেশের স্থলসীমান্তের পুরোটাই ঘিরে রয়েছে ভারত। দীর্ঘ এ সীমান্তের বড় একটি অংশ হয় দুর্গম অথবা নদী দিয়ে চিহ্নিত। এ ধরনের এলাকাগুলোয় সীমান্তরক্ষীদের সার্বক্ষণিক টহল চালানো প্রায় অসম্ভব। কাঁটাতারের বেড়াও নেই। নজরদারির অভাবে এসব এলাকা দিয়ে খুব সহজেই সীমান্তের এপার-ওপারে পাচার হয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের পণ্য। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটসহ দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সামনের দিনগুলোয় এ অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের আকার ও মাত্রা দুটোই আরো বাড়বে।

প্রতি বছর সীমান্তে পণ্য চোরাচালান করতে গিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের হাতে প্রচুর ব্যক্তি আটক হচ্ছে। তাদের সঙ্গে ধরা পড়ছে স্বর্ণ, গবাদিপশু, মাদকসহ নানা ধরনের দ্রব্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১২ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মোট ৮ হাজার ৭৪১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার পণ্য (বহির্মুখী ও অন্তর্মুখী) আটক করেছে বাহিনীটি। বর্তমানে এ আটকের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। ২০২২ পঞ্জিকাবর্ষের প্রথম নয় মাসেই আটককৃত পণ্যের মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৮ কোটি টাকায়।

তবে চোরাচালান বা অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের মাধ্যমে দুই দেশে পাচারকৃত পণ্যের প্রকৃত পরিমাণ এর চেয়ে অনেক গুণ বেশি বলে স্বীকার করছেন বাংলাদেশ ও ভারতের খাতসংশ্লিষ্টরাও। চোরাচালান বা অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যে প্রতিবেশী দুই দেশের লেনদেনকারীদের মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় পণ্য কেনাবেচার প্রচলন রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই ডলার রিজার্ভ কমতির দিকে রয়েছে। ডলারনির্ভর আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এলসি খুলতে গিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় সীমান্তকেন্দ্রিক অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের প্রবণতা বাড়ারও বড় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

তাদের ভাষ্যমতে, দ্রুতগতিতে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এরই মধ্যে রিজার্ভের পরিমাণ নেমে এসেছে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। রিজার্ভ পতনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোয় জরুরি পণ্য আমদানি খাত বড় ধরনের চাপে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের মাত্রা আরো বেড়ে যেতে পারে।

সীমান্তবর্তী সূত্র ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায়, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এখন বাংলাদেশী টাকার চাহিদা বেড়েছে। সেখানকার অনানুষ্ঠানিক পন্থায় পণ্য রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখন পণ্যের মূল্য হিসেবে বাংলাদেশী টাকা গ্রহণ করছেন। স্বর্ণ চোরাচালানে যুক্ত বাংলাদেশীরা এ টাকা আবার গ্রহণ করছেন পাচারকৃত পণ্যের মূল্য হিসেবে। আবার বাংলাদেশ থেকে স্থলসীমান্তে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খুলতে গিয়ে আন্ডার ইনভয়েসিং (আমদানি পণ্যের পরিমাণ কম দেখানো) ও হুন্ডির মাধ্যমেও টাকা পাচার হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ পাচার বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে দেশটিতে পণ্যটি আমদানিতে উচ্চমাত্রায় শুল্কারোপকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্যমতে, শুল্ক ফাঁকি দিতে গিয়ে দেশটিতে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেকেই এখন চোরাচালানের মাধ্যমে আনা পণ্য সংগ্রহের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত স্বর্ণ জব্দ করেছে ১৩৩ কেজি। একই সময়ে বাংলাদেশে শুধু যশোর সীমান্ত এলাকায়ই পাচারের সময়ে প্রায় ১৫০ কেজি স্বর্ণ আটক হয়েছে বলে স্থানীয় বিজিবি সূত্রে জানা গিয়েছে। দুই দেশেরই সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, যতটুকু আটক হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে পাচার হচ্ছে তার কয়েক গুণ বেশি।

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গে নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ বিএসএফ কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সানডে গার্ডিয়ানকে বলেন, গত তিন বছরে যা ধরা পড়েছে সেটি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারকৃত স্বর্ণের মোট পরিমাণের তুলনায় একেবারেই ক্ষুদ্র অংশমাত্র। এ তিন বছরে আটকের তথ্য দিয়ে প্রকৃত চিত্র পাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিএসএফ শুধু সেটুকুই আটক করতে পারে, যেটুকু সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এর বাইরে বাকিটুকু চোখের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।

গত জুলাইয়ে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় ৪১ কেজি ৪৯০ গ্রাম স্বর্ণের একটি চালান ধরা পড়ে। বিএসএফ জানিয়েছে, বনগাঁ জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছিল চালানটি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে পাচারকৃত স্বর্ণের এটিই সবচেয়ে বড় চালান আটকের ঘটনা।

বনগাঁয় চালানটি প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশের যশোর সীমান্ত হয়ে। বর্তমানে যশোর সীমান্ত হয়ে উঠেছে দেশের স্বর্ণ চোরাচালানের সবচেয়ে বড় রুটগুলোর একটি। দীর্ঘকাল ধরেই এলাকাটি স্বর্ণ চোরাচালানের ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এখান দিয়ে পাচারের পাশাপাশি চোরাচালানের সময়ে স্বর্ণ আটকের ঘটনাও অনেক বেড়েছে।

যদিও এসব স্বর্ণ চোরাচালানের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল হোতারা টাকার বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে এসব স্বর্ণ পাচার করাচ্ছে। যশোরের শার্শা উপজেলার শিকারপুর, ভবেরবেড়, দৌলতপুর এলাকার অনেক মানুষ এখন স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মনোহরপুর, ছুটিপুর, কাশিপুর, শালকোণা, পাকশিয়া এলাকা দিয়েও প্রচুর স্বর্ণ পাচার হচ্ছে।

মূলত দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন দুর্গম স্থান ও জলপথকেই স্বর্ণ চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে বৈধ পথে স্বর্ণ আসা-যাওয়া তেমন একটা হয় না বলে জানিয়েছে কাস্টমস। বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, চেকপোস্ট দিয়ে বৈধভাবে স্বর্ণ আস-যাওয়া তেমন একটা হয় না। আমাদের সদস্যরাও এখন চোরাচালান প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যশোরের একাধিক ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ও ব্যবসায়ী নেতা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে অনেক আগে থেকে প্রচুর টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে। গুঞ্জন রয়েছে, কোনো কোনো ব্যবসায়ী পণ্য আমদানিতে যে পরিমাণ টাকার এলসি করেন তার ১০ গুণ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাঠান। সে টাকা ব্যবহার হয় স্বর্ণ চোরাচালানে।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী টাকার ব্যবহার বেড়েছে বলে জানালেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী টাকার ব্যবহার হচ্ছে। মানি এক্সচেঞ্জসহ হুন্ডির মাধ্যমে এ টাকার লেনদেন হয়।

ক্রমবর্ধমান স্বর্ণ চোরাচালান দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সুনাম ক্ষুণ্নের পাশাপাশি ব্যবসায়িকভাবেও ক্ষতি করছে বলে জানালেন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি যশোরের সভাপতি রকিবুল ইসলাম চৌধুরী সঞ্জয়। তিনি বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত মূল হোতারা আটক হয় না। তারা টাকার বিনিময়ে লোক দিয়ে এ ধরনের কাজ করায়। বিজিবির কাছে যে পরিমাণ স্বর্ণ আটক হয়, পাচার হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। এ চোরাকারবারিদের কারণে আমাদের সমিতির সদস্যদের বদনাম হয়। আবার আমরা ব্যবসায়িকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। শুনেছি ওপারে (পশ্চিমবঙ্গে) বাংলাদেশী টাকায় স্বর্ণ কেনাবেচা হয়। শিগগিরই বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বর্ণের বার উৎপাদন হবে। তখন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা থাকবে বারের গায়ে।

বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিয়মিতভাবেই প্রচুর স্বর্ণ চোরাকারবারি আটক হচ্ছে। যশোর বিজিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে সেখানে বাহিনীটির হাতে আটক হয়েছে ১৫০ কেজি স্বর্ণ, যার মূল্য শতকোটি টাকার বেশি।

বিজিবি এখন স্বর্ণ চোরাচালানের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে বলে জানালেন যশোর ব্যাটালিয়নের (৪৯ বিজিবি) অধিনায়ক শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী। তিনি বলেন, স্বর্ণসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান রোধে আমাদের বিজিবি সদস্যরা কাজ করছেন। বিশেষ করে স্বর্ণ চোরাচালানের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে আমাদের গোয়েন্দা টিম কাজ করছে। চোরাচালানে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ছাড় দেয়া হবে না।

চোরাচালানের দায়ে আটককৃতরা কখনো কখনো মরিয়া হয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর শার্শার জামতলার পাঁচপুকুর এলাকায় একটি সাদা প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রাইভেটকারে থাকা রবিন সরকার ও চালক আবুল কাশেমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কুমিল্লা থেকে এসেছেন বলে জানান। একপর্যায়ে তাদের দেহ ও প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে রবিনের শরীরে বাঁধা অবস্থায় ও প্রাইভেটকারের সামনের দিকে রাখা ৩০টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়, যার মোট ওজন ৯ কেজি ৭৫৮ গ্রাম। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় মহাসড়কের দুদিক থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে অজ্ঞাতনামা একদল ব্যক্তি পুলিশকে লক্ষ্য করে চার-পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পুলিশ পাল্টা গুলি (রাবার বুলেট) চালালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের ছোড়া ককটেলে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোটরসাইকেলের নিচে চাপা পড়া ওলিয়ার নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি প্রাইভেটকার ও তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।

বণিক বার্তার প্রতিবেদনটির লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top