বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী: নিবন্ধনের পক্ষে তিন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৭ নাগরিক

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২৩ ০৪:৩২; আপডেট: ৬ মে ২০২৪ ০০:৪৫

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে পক্ষভুক্তের আবেদন করেছেন জামায়াত সমর্থক ৪৭ নাগরিক। আবেদনকারীদের মধ্যে তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও রয়েছেন।

মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করেন।

পরে জামায়াতের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের পক্ষে আপিল বিভাগে বক্তব্য তুলে ধরতে ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক আবেদন করেছেন। শুনানির দিন উপস্থাপন করা হবে।

এ সময় জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে জামায়াত ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং প্রত্যেকটি সংসদে জামায়াতের প্রতিনিধি ছিল। সুতারং গণতন্ত্র ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা জামায়াতের অধিকার রয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মূলনীতি লঙ্ঘন হয়েছে। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে জামায়াত যেমন আবেদন করেছে, দেশের নাগরিক হিসেবে ৪৭ বিশিষ্ট ব্যক্তিও মনে করেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য নিবন্ধন বহাল রাখার পক্ষে তারা পক্ষভুক্ত হয়েছেন।

আপিল আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে আবেদনকারী ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান, অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জিএম নজরুল ইসলাম, আবুল আজাদ মো. সাহাদুজ্জামান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, এএইচএম হামিদুর রহমান, হাফেজা আসমা খাতুন, অধ্যাপক সাহানারা বেগম, বাংলাদেশ ইসলামী ইউনির্ভাসিটির সাবেক ভিসি অধ্যাপক কোরবান আলী, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এম উমার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়ারেস, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাকিম ফকির, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন মিঠু, গোলাম রহমান ভূঁইয়া, আবদুল করিম, বেলায়েত হোসেনসহ ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

এর আগে দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ আপিল বিভাগে দাখিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গত ৩১ জানুয়ারি দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের জারি করা রুলের চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।

এ সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতকে আপিল করারও অনুমোদন দেন। তবে এ রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিটটি করেছিলেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top