দেশের ১ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৩:২৫; আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ১০:৩৭

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর এক শতাংশ করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় এসেছে বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর। তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে পৃথিবীর অনেক দেশেই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, কিন্তু তার মধ্যে খুব অল্প দেশই মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেছে।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ‘করোনা সংক্রমণের গতিবিধি ও টিকা’ শীর্ষক বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি।

দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তখন থেকে গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন, যা কিনা বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর এক শতাংশের চেয়েও কিছুটা বেশি।

ডা. আলমগীর বলেন, ‘যেসব দেশে টিকা দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে ১৫টির বেশি দেশ মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের বেশি টিকার আওতায় আসতে পেরেছে। বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। ইসরায়েল এক শতাংশের চেয়েও কিছু বেশি মানুষকে টিকা দিয়েছে, কিন্তু তাদের জনসংখ্যা অনেক কম। এছাড়া যুক্তরাজ্য ২৩ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পেরেছে। আবার আমাদের আগে টিকা কার্যক্রম শুরু করার পরেও জনসংখ্যা বেশি বিধায় ভারতও ওই টার্গেটে যেতে পারেনি।’

ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফের সঞ্চালনায় সংলাপে ইউজিসি অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, একুশে পদকপ্রাপ্ত অণুজীব বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিএইচআরএফের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

ডা. আলমগীর আরও বলেন, ‘কোভ্যাক্স থেকে মোট জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশকে টিকা সরবরাহ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে এটি বেড়ে ২৭ শতাংশ হতে পারে। দেশে এখন ক্লাস্টারভিত্তিক সংক্রমণ চলছে কিনা তা এ সপ্তাহের মধ্যেই জানা যাবে।’

গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম জানিয়ে ডা. আলমগীর বলেন, ‘আমরা স্বস্তির একটি পরিবেশে আছি, তবে এর মানে এই নয় সংক্রমণ কমে গেছে। বিশ্বের অনেক দেশেই সংক্রমণের হার কমে যাওয়ার পর পুনরায় তা বেড়েছে। তাই আমাদের ঢিলেমি দিলে চলবে না। টিকা নেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরা, ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলো আমাদের মানতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে টিকা মৃত্যু কমাবে।’

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা একটি অন্যতম পন্থা হলেও এটি একমাত্র পন্থা নয় বলে মন্তব্য করেন ডা. আলমগীর। সংলাপে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সংক্রমণ কম স্বস্তির বিষয় হলেও আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনও সুযোগ নেই। মৃত্যুর মিছিল ওঠানামা করছে। এখন অনেকেই আমাদের দেশে আসবে। ভাইরাস যাতে আমদানি না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। টিকা দেওয়ার পাশাপাশি মাস্কও পরতে হবে। দুটি মাস্ক পরলে তা আরও বেশি কার্যকর বলে জানা যাচ্ছে।’

সংক্রমণ কমলেও ঝুঁকিমুক্ত হইনি, ভবিষ্যতে ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘রাজনৈতিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন জনসমাবেশ হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে পারছি না। তাই এসব জনসমাবেশ বন্ধ করতে, ভবিষ্যতে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে সরকারকে এসব বিষয়ে জোর দিতে হবে, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনগুলোকে চাপ দিতে হবে।’

ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘সংক্রমণ কমানো এবং টিকা কার্যক্রম সফল করতে সমাজপতি থেকে শুরু করে ধর্মীয় নেতাসহ সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। টিকাদান কর্মসূচিতে নারী, বস্তি এলাকা, ভাসমান মানুষ এবং নিম্নবিত্তরা পিছিয়ে রয়েছে। তাদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে।’

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top