খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে যা জানালেন চিকিৎসকেরা

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২১ ১৫:৪১; আপডেট: ৫ মে ২০২৪ ০১:৩৯

ছবি: সংগৃহিত

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল তবে সুস্থ হয়ে উঠেননি বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক অধ্যাপক এ এফ এম সিদ্দিকী।
খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় ফেরার পর রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তার চিকিৎসক টিমের প্রধান এই কথা জানান।

তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ উনি (খালেদা জিয়া) স্থিতিশীল আছেন। তার মানে এই নয় যে উনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছেন। আমাদের মেডিকেল টিম যেটা এভারকেয়ার হাসপাতালে সুদক্ষ টিম আছে সেটা, দেশের বাইরে যারা আছেন এবং আমরা যারা আছি সবাই মিলে উনাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের রেখে চিকিতসাটা আপাতত এখানে (বাসায়) রেখে চালিয়ে যাবো।

ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, উনার অসুখটা চিকিৎসায় একটা স্থিতি অবস্থায় এসেছে। উনি কিউর হয়ে ‍যাননি। উনার যে হার্টের জটিলতা, কিডনির জটিলতা, লিভারের জটিলতা সেগুলো কোভিডের কারণে যে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছিল, ওই অবস্থার উত্তরণ ঘটেছে। কিন্তু সেই অসুস্থতাগুলো রয়েই গেছে। সেগুলোকে এড্রেস করার যে চিকিৎসা এবং যে প্রস্তুতি বা প্রক্রিয়া সেইগুলো আমরা কিন্তু এখনো পরিপূর্ণভাবে করতে পারিনি। যার জন্য একটা রিস্ক উনার থেকেই যাচ্ছে। আমরা প্ল্যান করেছি যে উনাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাব, উনি অবজারভেশনে আছেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ বা তিন সপ্তাহ পরে আবার আমাদের অপশন রাখতে হচ্ছে যে উনাকে হসপিটাল নিয়ে রিভিউ করার প্রয়োজন হতে পারে।

এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, উনার যে জটিলতাগুলো আছে সেগুলো প্রাইমারি ডিজিজ। সেগুলোর চিকিৎসার জন্য আমরা মেডিকেল বোর্ড থেকে কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা আমরা লিখিত আকারে উনারদের কাছে দেবো।

এভার কেয়ার হাসপাতালে ৫৪দিন চিকিৎসা শেষে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দেশে সম্ভব কিনা প্রশ্ন করা হলে এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, আমরা একটা লেভেল পর্যন্ত উনার চিকিৎসাটা চালিয়ে কতগুলো জটিলতা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তু কতগুলো বিষয় আছে যেমন উনার যে লিভারের সমস্যা আমরা ধরতে পেরেছি সেটা কোন স্টেইজে আছে এবং এমন সব সেন্টারে এসব অ্যাসেসমেন্ট হওয়া উচিত যেখানে আর্টিফিশিয়াল লিভার সাপোর্ট, আর্টিফিশিয়ালি অন্যান্য এডভান্স টেকনোলজি এ্যাপ্লাই করতে পারে। অসুস্থতা কিন্তু শুধু লিভারে থাকে না, খাদ্যনালীতে হয় যেটা সমস্ত শরীরে তার প্রভাব ফেলে। যেটাতে মেজর কতগুলো কমপ্লিকেশন হতে পারে। সেই ধরনের টেকনোলজি বা সেই ধরনের এডভান্স টিট্রমেন্ট সাপোর্ট আমাদের বাংলাদেশে নেই বলে আমরা মনে করছি। আমাদের লিখিত প্রতিবেদনে সেটা আমরা বলেছি।
কেনো তাকে পরিপূর্ণ সুস্থতা ছাড়া বাসায় নিয়ে আসা হলো তার কারণ উল্লেখ করে তার চিকিৎসক টিমের প্রধান বলেন, হাসপাতালে রাখাটা অনেক রিস্ক বেশি হয়ে যাচ্ছি সেজন্য বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনবার উনার রক্তে ইনফেকশন হয়েছে। প্রত্যেকটা ইনফেকশন হাসপাতালের অর্গানিজমে। অর্থাৎ আমরা যখন ব্লাড কালচার করি সেই জীবাণু দেখতে পাই, সেই জীবাণুগুলো সহজে চিহ্নিত করা যায় এটা কোত্থেকে আসছে। আপনারা শুনেছেন যে বুকে দুটি চেস্ট টিউব নিয়ে ২৪ ঘন্টা উনার পাশে দুটি ব্যাগ লাগানো সেখানে উনি দেখতে পারছে হেমোরেজ, রক্ত আসছে। উনি নিজে চোখের সামনে দেখতে পারছেন। সেগুলো নিয়ে উনি ১৮/১৯ দিন কাটিয়েছেন। আল্লাহর রহমত উনি খুব দৃঢ়তার সাথে আমরা যেভাবে উনাকে বলেছি উনি সেভাবে আমাদের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য চিকিৎসাটা এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে।

বিদেশে নিয়ে যাওয়া জরুরি কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উনার হার্টের কিছু কিছু টিট্রমেন্ট এ এডভান্সমেন্ট আমাদের দেশে আছে। কিডনি ট্রিটমেন্টের ওই ধরনের এডভান্সমেন্ট এখানে নেই, কিছু কিছু ম্যানেজ করা যায়। কিন্তু লিভারের সমস্যা হয়ে যখন ডিকম্পো্নসেশন হয়, ওই সমস্যার সার্বিক মূল্যায়ন করে স্টেটেজিং করে সেইগুলোর আনুসাঙ্গিক যে চিকিৎসা দরকার ওই টোটাল ট্রিটমেন্ট এবং সাপোর্ট আমাদের দেশে নেই।

এ সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,চিকিতসক টিমের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।

 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top