শিগগিরই রায়

শেষ পর্যায়ে সাহেদ ও পাপিয়ার মামলা প্রক্রিয়া

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৭:৫৫; আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:১৬

ফাইল ছবি

দেশের অপরাধ জগতের আলোচিত দুই নাম রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ও নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া। অপরাধ জগতে অন্যদের চাপিয়ে গিয়েছিলেন এই দুই অপরাধী।

সর্বশেষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জালে ধরা পড়ে তারা।

অপরাধ চক্রের এই দুই মূল হোতার বিচার দেখার অপেক্ষায় দেশের উৎসুক জনগণ। দুইজনের মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে। তাদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে করা দুটি অস্ত্র মামলার রায় সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অথবা অক্টোবরের শুরুতে ঘোষণা করা হতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। যদিও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে সাহেদ ও পাপিয়া ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছেন। ঢাকার ১ নম্বর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলা দুটি বিচারাধীন।

মামলা দুটি শেষের পর্যায়ে রয়েছেন বলে জানান ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মো. আবদুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, দুটি মামলায় ‘যুক্তিতর্ক পর্যায়ে’ রয়েছে। আশা করছি, চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) শেষের দিকে অথবা আগামী মাসের (অক্টোবর) শুরুর দিকে আদালত মামলা দুটির রায় ঘোষণা করবেন।

এছাড়া দুই আসামীর অপরাধ প্রমান করে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার কথা ও জানান তিনি।

এছাড়া মামলা দুটির বিষয়ে কথা হয় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পালের সাথে। তিনি বলেন, মামলা দুটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের প্রচেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

প্রতারক সাহেদের মামলার আদ্যোপান্ত :

সাহেদের মুখোশ উন্মোচনের পথ তৈরী হয় ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা মাধ্যমে। পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযানে ভুয়া করোনা টেস্টের রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। এরপর রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে সিলগালা করা হয়। ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করোনা টেস্ট প্রতারণার অভিযোগে মামলা করে র‌্যাব। মামলায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন এ মামলায় তার ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। আদালতের অনুমতিক্রমে ডিবি পুলিশ সাহেদকে নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে। তদন্ত শেষে ৩০ জুলাই অস্ত্র মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। ১০ আগস্ট চার্জশিট আমলে নেন আদালত। ২৭ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মধ্যদিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। ১০ সেপ্টেম্বর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর তা শেষ হয়। চার্জশিটভুক্ত ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাহেদ। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজ দিন ধার্য রয়েছে। এসব মামলা ছাড়াও সাহেদের বিরুদ্ধে সারা দেশে অন্তত অর্ধশত মামলা রয়েছে। বর্তমানে সাহেদ কারাগারে আছেন।

প্রতারক পাপিয়া ও তার স্বামীর মামলার আদ্যোপান্ত :

এই দুই প্রতারক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে ধরা পড়েন ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই নম্বর বহির্গমন টার্মিনালের ছয় নম্বর স্টাফ গেটের সামনে থেকে। তাদের দেহ তল্লাশি করে পাপিয়ার কাছ থেকে একাধিক পাসপোর্ট, নগদ অর্থ, জাল নোট; পাপিয়ার স্বামী মো. মফিজুর রহমানের কাছ থেকে একাধিক পাসপোর্ট, নগদ অর্থ ও বিদেশি অর্থ; সহযোগী আসামি সাব্বির খন্দকারের কাছ থেকে একাধিক পাসপোর্ট, নগদ অর্থ, জাল নোট; শেখ তাইবা নূরের কাছ থেকে একটি পাসপোর্ট, নগদ অর্থ ও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া দম্পতির দেয়া তথ্যানুসারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ফার্মগেট ইন্দিরা রোডের বাসায় ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে অস্ত্র, বিদেশি মদ, নগদ অর্থ ও ভারতীয় রুপি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি করে দুটি ও বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করে । খবর-যুগান্তর

  • এসএইচ

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top