রাজশাহীতে বাড়লো পেঁয়াজ-ডিমের দাম

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২ ০৫:৫১; আপডেট: ১৪ মে ২০২২ ০৬:২০

ছবি: প্রতীকী

সয়াবিনের পর এবার রাজশাহীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ডাল ও ডিমের দাম। এদিকে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম গত ৫ মে লিটারে ৩৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানোর পরও তা ঠিকমতো পাচ্ছিলেন না ক্রেতারা।

এরইমধ্যে ভোজ্যতেল মজুতবিরোধী প্রশাসনিক অভিযানের সুফল পেতে শুরু করেছেন ক্রেতারা। বাজারে তেলের সরবরাহ অনেকটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুক্রবার (১৩ মে) রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

আজ শুক্রবার (১৩ মে) মহানগরীর সাহেব বাজারে দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশি দামে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, বাজারে কাঁচা মরিচের দামের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে আজ প্রতিকেজি কাঁচা মরিচে ২০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছোট দানার মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা এবং মুরগির লাল ডিম হালিতে ৬ টাকা বেড়ে ৩৮ টাকা ও সাদা ডিম ৪ টাকা বেড়ে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ ও সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, অপরিবর্তিত রয়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। বেগুন ৫০ টাকা, পটল ৩০, ঢেঁড়স ৩০, লাউ ৩০, শসা ৪০, করলা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজার প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি কেজি রুই মাছ ২৬০ টাকা, মিরকা ১৮০, পাবদা ৩০০, ট্যাংরা ৭০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে চিংড়ি মাছের দাম কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৪০০ টাকায় উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের আগে থেকে বাজারে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট ও দাম বাড়িয়ে দিলে সাধারণ ক্রেতারা বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেল, পামওয়েল পাচ্ছিলেন না। ঈদের পর পরই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এবং স্থানীয় প্রশাসন মজুত বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করলে ব্যসায়ীদের গোডাউন থেকে ব্যারেল ব্যারেল ভোজ্যতেল বেরিয়ে আসতে থাকে।

অভিযানের সময় আর্থিক জরিমানা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারও করা হয়। একইসঙ্গে অবৈধভাবে মজুত, দাম বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করায় গুদাম সিলগালা, ব্যবসায়ীদের আর্থিক জরিমানা করা হয়। আজ রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে ঘুরে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা যায়নি। সর্বশেষ বেঁধে দেওয়া বর্ধিত মূল্যে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯৮ টাকায় এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে সরবরাহ কমলে এবং চাহিদা বাড়লে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। এটাই সবসময় ঘটছে। এতে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই। এটি আমদানিকারক, পাইকার এবং ক্রেতাদের ওপর নির্ভর করে।’ এদিকে, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজশাহীর ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, ‘আমাদের বাজারে কোনো পণ্যের ক্রাইসিস শুরুর পর প্রশাসন মনিটরিং শুরু করেন। কিন্তু কখনো বছরজুড়ে বাজার মনিটরিং করা হয় না। আমাদের বাজার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো উচিত এবং সমস্যার গভীরে না গিয়ে হঠাৎ করে দেশজুড়ে অভিযানের নামে হুলস্থুল পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে শুধু জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ তিনি অনতিবিলম্বে দেশের বাজার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর সুপারিশ করেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ বলেন, ‘মজুত বিরোধী অভিযান শুরুর পর রাজশাহী অঞ্চলে ভোজ্যতেলের বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে। মানুষ এখন সরকার নির্ধারিত মূল্যে ভোজ্যতেল কিনতে পারছেন। অন্যান্য পণ্যের দাম কেনো বাড়ছে, সে বিষয়ে অনুসন্ধান ও বাজার পরিদর্শন চলছে।’

শিগগিরই অন্যান্য পণ্যের দামও স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top