যে আমলে মা-বাবার সম্মান বেড়ে যায়
রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২২ ২২:০১; আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:২৪
 
                                প্রত্যেক মা-বাবার জন্য সবচেয়ে দামি একজন সুসন্তান। এই সুসন্তান বা পরহেজগার সন্তানের কারণে মা-বাবার সম্মান দুনিয়াতেই শুধু বাড়ে না, পরকালেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ জান্নাতে নেককার বান্দার মর্যাদা সমুন্নত করবেন, তখন সে বলবে, হে আমার রব, কেন আমার জন্য এই উচ্চ মর্যাদা? তখন আল্লাহ বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে।’ (মুসনাদ আহমদ: ১০৬১০)
অর্থাৎ মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার কারণে মহান আল্লাহ তাঁদের জান্নাতের উচ্চাসন দান করবেন। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত মা-বাবার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কেননা আখেরাতে মা-বাবা অবিশ্বাস্য সম্মানের অধিকারী হবেন সন্তানের দোয়ার কারণে।
বহু নেককার মানুষেরও মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যে মা-বাবা পরহেজগার সন্তান রেখে কবরে যান, মৃত্যুর পর তাঁর নেকি অর্জনের পথ বন্ধ হয় না। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমল বন্ধ হয় না। সেগুলো হলো- সদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যার মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।’ (মুসলিম: ১৬৩১)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমলের প্রতিদান অব্যাহত থাকে। ১) যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষা দেবে অথবা ২) নদী খননের ব্যবস্থা করবে অথবা ৩) কূপ খনন করবে অথবা ৪) কোনো খেজুরগাছ রোপণ করবে অথবা ৫) মসজিদ নির্মাণ করবে অথবা ৬) কোরআন (তেলাওয়াতের জন্য অথবা এর আহকাম জীবনে বাস্তবায়নের জন্য) কাউকে দান করবে, অথবা ৭) এমন কোনো সন্তান রেখে যাবে, যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।’ (মুসনাদে বাজজার: ৭২৮৯; সহিহুত তারগিব: ৭৩)
উপরোক্ত দুই হাদিসেই নবীজি (স.) সুসন্তানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। অতএব, দুনিয়া ও আখেরাতে মা-বাবার মর্যাদা বাড়ানোর জন্য আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করতে হবে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত সেরকম একটি দোয়া হলো- رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ‘রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
আরেকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো- رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ‘রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)
উল্লেখ্য, সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা প্রত্যেক মা-বাবার জন্য জরুরি। কেননা হাদিস অনুযায়ী, সুসন্তানই হচ্ছে ইহকাল ও পরকালের পাথেয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজের সন্তানদের সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন এবং প্রত্যেক সন্তানকে মা-বাবার জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 
                                                     
                                                     
                                                    -2023-04-17-11-04-55.jpg) 
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: