হিজাব নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ রাবির ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে

রাবি প্রতিনিধি : | প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৪ ১৮:০১; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৪

ছবি: প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ক্লাসরুমে বোরকা পরা ও মুখ ঠাকায় শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার আপত্তিকর কয়েকটি কথোপকথনের স্কিনসট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

সোমবার (১১ মার্চ) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে (Sidratul Muntaha) নামের একটি আইডি থেকে পোস্ট করে এই অভিযোগ করা হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান রাফি।

ফেসবুকের সেই পোস্টে লেখা হয়, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের কাজ কী? অবিবাহিত লুচ্চা শিক্ষকদের কেনো ক্লাস দেওয়া হয় যারা বোরখা এবং হিজাবের মতো এতো সেনসিটিভ একটা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে? ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হয়ে তার এই সাহস কিভাবে হলো? নেকাব খুলতে বাধ্য করা, পর্দানশীন মেয়েদের হেনস্তা করা, 'মাথা থেকে পা পর্যন্ত প্যাকেট হয়ে এসেছ', ট্যুরের নাম দিয়ে নিয়ে গিয়ে বাংলা-হিন্দি গানে নিজে নাচা- ছাত্রীদের নাচানো- এসব কিছু এই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা কিভাবে করে?

সেখানে আরও লেখা আছে, সংখ্যাটা যদি কমও হয়, অন্য শিক্ষকরা কি এতটাই জিম্মি তাদের কাছে? নাকি ইসলামী স্টাডিজ বিভাগে ইসলামী ভাবধারার বাইরের শিক্ষক বেশি? এই শিক্ষককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে সাধারন শিক্ষার্থীদের বলছি তোমরা এক হও। এসকল বেয়াদব শিক্ষকদের সকল ইয়ারে ক্লাস থেকে বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি।

চেয়ারম্যান স্যার এবং ডিন'স স্যারের কাছে এর একটা সুষ্ঠ ফয়সালা কামনা করছি'।

এবিষয়ে জানতে কথা হয় ফেসবুকে পোস্টদাতা (সিদরাতুল মুনতাহা)-এর সাথে। তিনি বলেন, ১ম বর্ষের ক্লাসে স্যার ক্লাস নিচ্ছিলেন। একটা মেয়ে গরম লাগায় শক্ত একটা কাগজ দিয়ে বাতাস খাচ্ছিল। স্যার তাকে ডেকে বললেন এতো গরম লাগে প্যাকেট হয়ে আসো কেনো? কি দরকার এভাবে প্যাকেট হয়ে আসার।

তিনি আরও বলেন, উনি মুখ খুলে প্রেজেন্ট নেন। মুখ না খুললে উনি শুনতে পান না, সবাইকে না তবে ৩/৪ জনকে এমন করেছে। গতকাল একটা মেয়েকে যে খাস পর্দা করে তাকে দাড়া করিয়ে জিজ্ঞাসা করেছে এটা কি ধরনের হিজাবের স্টাইল?? এমন প্যাকেট হয়ে আসার কি দরকার। অন্যদের মতো হালকা পরতে পারোনা??
মেয়েটা বলেছে স্যার এটা যার যার অভিরুচি। পরে স্যার তার উপর রেগে যায়।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, আমি যতদূর জেনেছি ফেক আইডি থেকে এই ধরনের পোস্ট করা হয়েছে। আর ক্লাসে আমি কখনোই এমন কিছু বলবো না যে কথায় কারোর হার্টে আঘাত লাগে। কারন আমি একজন মুসলিম। অবশ্যই পর্দাকে সম্মান করতে হবে। সেটা এমনভাবে করবো না বা বলবো না যেটা কারোর আঘাত লাগে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকের নামে এগুলো বলার আগে একটু তো ভাবা দরকার। আমাদের তো বলা যায়। অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না লিখে ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান আছে, অনুষদের ডীন আছে তাদেরকে বলতে পারতো৷ তারপরে যদি মনে করতাম এটা আমার ভুল হয়েছে বা স্লিপ অব দ্যা টাঙ হয়েছে তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে বলতাম হ্যা আমার ভুল হয়েছে, সরি। যদি আমার ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমার স্বীকার করতে অসুবিধা নেই। কিন্তু এরকম সিচুয়েশন সৃষ্টি হয় নি।'

এবিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. মো. আশরাফ-উজ-জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোন ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আমি সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।

এদিকে শ্রেণীকক্ষে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান-এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ বিকেল তিনটায় মানববন্ধন করবেন।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top