রাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল ঘোষণা

রাবি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৪; আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৬

- ছবি - ইন্টারনেট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে আংশিক প্যানেল ঘোষণা দিল স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টার দিকে এক সমাবেশে প্যানেল ঘোষণা করে জোটের প্রার্থীরা তাদের ভিশন ও অঙ্গীকার প্রকাশ করেন।

ঘোষিত প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাওহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নুসরাত জাহান নুপুর এবং সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে থাকছেন জান্নাত আরা নওশীন।

এছাড়া তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে মো. মনিরুজ্জামান, সহ পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে শাহীন আলম, নির্বাহী সদস্য পদে মো. নাজমুল হক সহ অন্যান্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আরও অনেক প্রার্থী।

জোটের নেতারা বলেন, রাকসু শুধু একটি ছাত্র সংসদ নয়—এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার, স্বপ্ন ও সংগ্রামের প্রতীক। দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট ১৩ দফা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে, রাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নিয়মিত নির্বাচন নিশ্চিত করা, পরীক্ষা ও ফলাফল সময়মতো প্রকাশ এবং একাডেমিক সমস্যা সমাধান, সম্পূর্ণ আবাসিকতা নিশ্চিত করতে মাসিক আবাসন ভাতা চালু, হলের ক্যান্টিনে ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ, উন্নত চিকিৎসা সেবা, বিশেষ করে নারীদের জন্য গাইনি সেবা চালু, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সপ্তাহে ৭ দিন খোলা রাখা (সকাল ৭টা–রাত ১০টা পর্যন্ত), আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা ও নিয়মিত শাটল সার্ভিস চালু, ক্যাম্পাসে বহিরাগত অনুপ্রবেশ ও হকার নিয়ন্ত্রণ, শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থীদের জন্য সিট ও বিশেষ বৃত্তি বরাদ্দ, যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে “জিরো টলারেন্স” নীতি বাস্তবায়ন।

সমাবেশে ভিপি পদপ্রার্থী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, “এই নির্বাচন আমার কাছে কোনো পদ-পদবীর প্রতিযোগিতা নয়; এটি দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতার প্রশ্ন। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিনিধি নয়, বরং সহযোদ্ধা হিসেবে দেখুক।”

তিনি আরও যোগ করেন, অতীতে ছাত্র সংসদ কিছু গোষ্ঠীর আধিপত্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জায়গায় পরিণত হয়েছিল। এবার সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে জন্য শক্তিশালী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাকসু প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য।

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোটের এজিএস পদপ্রার্থী জান্নাত আরা নওশীন বলেন, “রাকসু নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে কখনো ভাবিনি। তবে সিনিয়রদের উৎসাহই আমাকে সাহস জুগিয়েছে। কারণ, অতীতে নারী প্রার্থীরা নানা ধরনের সাইবার বুলিং ও হয়রানির শিকার হয়েছেন—যা আমাদের নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় বাধা।”

তিনি আরও যোগ করেন, “ফেসবুকে প্রতিনিয়ত বিদ্বেষমূলক মন্তব্য হতাশ করে। মতভিন্নতা স্বাভাবিক, কিন্তু শিক্ষার্থীদের প্রতি অশালীন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। তাই প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত আমাকে আরও দৃঢ় করেছে। নির্বাচিত হলে সবার আগে আমি সাইবার বুলিং প্রতিরোধে কাজ করব।”

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট ঘোষণা করেছে, তারা সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অধিকারভিত্তিক সংগঠনকে এক ছাতার নিচে এনে আধিপত্যবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলবে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন অকার্যকর থাকা সিনেটকে পুনরুজ্জীবিত করে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটাবে।

শেষে প্রার্থীরা বলেন, “শক্তিশালী রাকসু প্রতিষ্ঠিত হলে আর কোনো শিক্ষার্থী তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। তাই আমরা সকলের সমর্থন ও দোয়া কামনা করছি।”



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top