প্রতারকে চক্রের কবলে রাসিক মেয়র!

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:১৩; আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:১৫

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

একটি প্রতারক চক্র রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নামে জাল নথিপত্র তৈরি করে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বলেছে অভিযোগ উঠেছে।

মেয়র জানান, প্রতারক চক্রটি জাল নথিপত্র দিয়ে ৮টি ফায়ার ট্রাক কেনার জন্য কোরিয়ার শিনশিন গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ১০ দশমিক ১২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। ট্রাক সরবরাহের কাজ পেতে কোম্পানিটি ফিলিপাইন ও যুক্তরাজ্যের দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭৮ হাজার ৮৯৩ ডলার পাঠিয়েছে যা প্রতারকদের হাতে গেছে।

আজ বুধবার বিকেলে রাজশাহী নগর ভবন অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান খায়রুজ্জামান লিটন।

মেয়র বলেন, অগ্নি নির্বাপন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সেবার মধ্যে পড়ে না। এর জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি সরকারি সংস্থা আছে। স্বভাবতই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কেনার প্রশ্ন আসে না। বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক ও অযৌক্তিক।

তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিটি তৃতীয় কোনো পক্ষের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে নাকি কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট বায়ং চেয়ল শিন ও তার সহযোগীরা নিজেরাই ভুয়া নথিপত্র তৈরি করে রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে তা তদন্ত করে জানা যাবে।

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে মেয়র উল্লেখ করেন।

মেয়র জানান, শিনশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে রাজশাহীতে ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর চিঠি দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট বায়ং চেয়ল শিন রাজশাহীতে এসেছিলেন। একাধিক আলোচনার পর রাজশাহী সিটি করপোরেশন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে অনাগ্রহ দেখায়। সেখানেই বিষয়টির পরিসমাপ্তি হয়।

এর প্রায় তিন বছর পর ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর বায়ং চেয়ল শিন টেলিফোন করে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাডভাইজার মো. আশরাফুল হকের কাছে ফায়ার ফাইটিং ট্রাক সরবরাহের ব্যাপারে জানতে চান। কোনো ট্রাক কেনার ব্যাপারে তথ্য না থাকার কথা জানানো হলে তিনি ইমেইলে আটটি ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কেনার ভুয়া ডকুমেন্ট ইমেইলে পাঠান। যাচাই করে দেখা যায়, ফায়ার ফাইটিং ট্রাক ক্রয় নিয়ে যাবতীয় যোগাযোগ একটি ভুয়া ইমেইল ঠিকানা থেকে করা হয়েছে যার সঙ্গে মেয়রের ইমেইল ঠিকানার মিল থাকলেও এক নয়।

এছাড়া মেয়রের ভুয়া ফোন নাম্বার, অস্তিত্ববিহীন কর্মকর্তাদের নাম ও পদবি এবং মেয়রের পাসপোর্ট জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন খায়রুজ্জামান লিটন।

জালিয়াত চক্রের সঙ্গে কোম্পানিটির যোগাযোগ থেকে জানা যায়, ১০ দশমিক ১২ মিলিয়ন ডলারের ওই কাজ পেতে ফিলিপাইনে একটি ব্যাংক হিসাবে ৩০ হাজার ডলার ও যুক্তরাজ্যে একটি ব্যাংক হিসাবে ৪৮ হাজার ৮৯৩ ডলার পাঠাতে বলা হয়। সিটি করপোরেশনে পাঠানো চিঠিতে কোম্পানিটি বলেছে যে তারা ওই অর্থ পাঠিয়েছে।

মেয়র বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি আন্তর্জাতিক চক্র এই কাজ করেছে। কোম্পানিটি মেয়রের বিরুদ্ধে সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে অভিযোগ করায় তিনি বিব্রত।

 



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top