সবুজ নগরী রাজশাহীতে নীড় হারাচ্ছে পাখি

সোহরাব হোসেন সৌরভ | প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:২৭; আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৩৩

গাছে গাছে পাখি

সবুজ নগরী রাজশাহীতে নীড় হারাচ্ছে পাখি। যতই দিন যাচ্ছে গ্রামগুলো শহরে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন দালান, রাস্তাঘাট গড়ে ওঠায় গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। দিন দিন কমে আসছে গাছগাছালির পরিমাণ। এ কারণে সবুজ নগরী পরিণত হচ্ছে ইট পাথরের শহরে। গাছ কেটে ফেলার কারণে শামুকখোল, গানচিল, শকুন, ময়না, টিয়া, কোকিলসহ বিভিন্ন অতিথি পাখি হারিয়ে ফেলছে তাদের নীড়।

কয়েক বছর আগেই রাজশাহী শহরের কারাগার চত্বরেই শতশত পুরনো বিভিন্ন উঁচু উঁচু গাছে বসবাস ছিল হাজার হাজার পাখির। কিন্তু জেলখানার সীমানা প্রাচীর ও উঁচু দালান নির্মাণ করার কারণে কেটে ফেলা হয় গাছগুলো। এতে করে হাজার হাজার পাখি আশ্রয় হারায়। পরে আশ্রয় নেয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন গাছে। কিন্তু সেখানে ড্রেন নির্মাণ করায় আবারো নীড় হারা হয় পাখিগুলো।

প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানের গাছ কোনো না কোনো অজুহাতে কাটা হচ্ছে। অথচ যে সকল গাছ কাটা হচ্ছে, সেগুলোতে পাখির বাসা আছে কি না তা লক্ষ্য করা হচ্ছে না। এর কারণে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে আরডি এর ড্রেন নিরমার্ণের অজুহাতে দুইটি গাছ কেটে ফেলা হলে গাছে বাসাবাধা শামুকখোল পাখি ও বাচ্চাসহ শ্রায় শতাধিক পাখি মারা যায়। ৮০টি পাখিকে হত্যা করা হয়েছে- এমন অভিযোগে বন্যপ্রাণী অধিদপ্তর ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা করে রাজশাহী কোর্টে। তারপরও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) কেটে ফেলা হয় দুইটি গাছ। এগুলোতেও ছিলো বিভিন্ন পাখির বসবাস। শুধু রুয়েট, রাজশাহী মেডিকেলই শুধু নয় রাজশাহীতে যেন গাছ কাটার ধুম পড়েছে। স্কুলকলেজ গুলোতে প্রতিদিন কোনো না কোনো অজুহাতে শত শত পুরনো গাছ কাটা হচ্ছে।

শুধু গাছ কাটার কারণে পাখিগুলো নীড় হারাছে তা নয়, শিকারিদের কারনেও অনেক পাখি আজ নীড় হারা হচ্ছে। শীত মৌসুমে রাজশাহী উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয়ে এসব পাখি দেখা যায়। যেমন বালি হাঁস, বক, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালী, কাস্তেচাড়া পানকৌড়িসহ বিভিন্ন পাখির আনাগোনা থাকে এসব জায়গায়। এসব পাখির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন শিকারিরা। আইনের তোয়াক্কা না করে নগদ অর্থের লোভে অভিনব কৌশলে অতিথি পাখিসহ দেশীও পাখি নিধনে তৎপর হয়ে উঠেছেন শিকারিরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন , ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও রাজশাহী অঞ্চলে খুব বেশি সংখ্যক শামুকখোল চোখে পড়তো না। কিন্তু, এখন অনেক পাখি এ এলাকায় দলবদ্ধভাবে বাস করছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও পর্যাপ্ত খাবারের উৎস থাকায় গত সাত থেকে আট বছর ধরে শামুকখোল পাখি এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছে। অথচ নানা কারণে এসকল পাখি বার বার নীড় হারাচ্ছে।

 

 

 

এসকে




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top