চাঁদে অবতরণের পর কী করবে ভারতের চন্দ্রযান?

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২৩ ০৩:৪২; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ১৭:৪৮

ছবি: সংগৃহীত

চাঁদের নাগাল পেতে আর কয়েক ঘণ্টা বাকি চন্দ্রযানের। আজ বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে ভারতের পাঠানো যানটি। আগের চন্দ্রযানের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি এবার হবে না বলেই আশায় বুক বাঁধছে দেশটির জনগণ। তবে পুরনো ভুল সংশোধন করে এই চন্দ্রাভিযান নিয়ে বেশ আশাবাদী ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, ইসরোর বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, চাঁদের বুকে যানটির আসল কাজ শুরু হবে মাটিতে নামার পর থেকেই।

বিজ্ঞানীরা বলছে, চাঁদে চন্দ্রযান ৩ এর ‘ল্যান্ডার বিক্রম’ সফলভাবে অবতরণ করলে তা ভারত এবং ভারতীয়দের জন্য অত্যন্ত গর্বের এক মুহূর্ত হবে। তবে বিজ্ঞানীদের কাজ মাত্র অর্ধেকই শেষ হবে এখানে কারণ তারপরই চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে নিয়ে পরীক্ষা চালাতে হবে তাদের। আজ পর্যন্ত কেউ পা রাখেনি চাঁদের এই দক্ষিণ মেরুতে।

সাবধানী বিক্রম: পুরনো ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্কতার সাথেই ল্যান্ডারকে চাঁদের বুকে নামাচ্ছে ইসরো। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব কাজ অবশ্য নিজেই করবে বিক্রম। চাঁদের মাটিতে পা দেওয়ার কিছু সময় আগে থেকেই অবতরণের অনুকূল জায়গা খুঁজবে সে। জায়গাগুলোর ছবি তুলে বোঝার চেষ্টা করবে সেখানে কোনও গর্ত রয়েছে কি না?

বিকল্প ব্যবস্থা: ইসরোর এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, যদি চাঁদে নামার মতো অনুকূল পরিস্থিতি না থাকে তবে অবতরণ প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে আগামী ২৭ আগস্ট চাঁদে নামবে বিক্রম।

বিক্রমের ভিতরে রয়েছে রোভার প্রজ্ঞান: চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার বিক্রম নামার পরেই তার একটি অংশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে। একটি ঢালের মত প্লেট নেমে আসবে চাঁদের মাটিতে। আর ওই ঢালু পথ বেয়েই চাঁদের বুকে নেমে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটিতে নেমে চার ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটাচলা শুরু করবে প্রজ্ঞান। ছ’টি চাকায় ভর করে প্রতি সেকেন্ডে ১ সেন্টিমিটার পথ পাড়ি দেবে সে।

রোভারের সাথে থাকবে একাধিক দিকনির্দেশক স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা। চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান চালাবে সে। চাঁদের মাটিতে প্রজ্ঞান ভারতের জাতীয় পতাকা এবং ইসরোর লোগো আঁকবে। প্রজ্ঞান চাঁদ থেকে যা যা তথ্যসংগ্রহ করবে তার সব কিছুই পাঠিয়ে দেবে ল্যান্ডার বিক্রম এর কাছে। বিক্রম সেই বার্তা পাঠাবে পৃথিবীতে।

মূলত কী কাজ করবে প্রজ্ঞান: একাধিক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিয়ে চাঁদে নামছে প্রজ্ঞান। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চাঁদের মাটি কীভাবে তৈরি হয়েছে, কোন কোন উপাদান দিয়ে চাঁদের মাটি তৈরি তা খতিয়ে দেখে বার্তা পাঠাবে প্রজ্ঞান। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে স্পেকট্রোমিটার বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে কোন ধরণের খনিজ বস্তু আছে কিনা তা খুঁটিয়ে দেখবে প্রজ্ঞান। এই সমস্ত পরীক্ষাগুলোর জন্য ল্যান্ডার এবং রোভারের সাথে রয়েছে পাঁচটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা: ল্যান্ডার সফলভাবে অবতরণ করলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম দেশ হিসেবে পা রাখবে ভারত। এত দিন চাঁদের অনাবিষ্কৃত এই দিকটিতে কোনও দেশের চন্দ্রযানই পা রাখেনি। ভবিষ্যতে যদি গবেষণা এবং সম্পদের নিরিখে চাঁদের এই এলাকা বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্ব পায়, তবে ভারত সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top