বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বদল, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পাঁচ শ্রেণির

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২৫ ১১:২১; আপডেট: ৬ জুন ২০২৫ ০৭:৩৬

- ছবি - ইন্টারনেট

বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা দিয়ে তিন বছর আগের করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

মঙ্গলবার রাতে জারি করা এ অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সহযোগীর সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধসহ আরো কিছু বিষয়ের নতুন সংজ্ঞা।

নতুন সংজ্ঞার পাশাপাশি আগের আইনের ১০টি ধারায় বেশ কিছু সংশোধন এনে এ অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আগের আইনের প্রস্তাবনার যে অংশে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের’ নাম ছিল, সেসব শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে অধ্যাদেশে।

এর আগে ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধ বলতে ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষায় হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধকে’ বোঝানো হয়েছে।

অধ্যাদেশে নতুন সংজ্ঞায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন

• যাহারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এবং

• বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, এরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক (ওই সময়ে যাদের বয়স সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে) এবং

• সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তি বাহিনী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) ও উক্ত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্যরা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন।

• একই সঙ্গে অধ্যাদেশের নতুন সংজ্ঞায় ‘হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীর মাধ্যমে নির্যাতিত সব নারী (বীরাঙ্গনা)’ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন।

• পাশাপাশি ‘মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সহকারীরারও’ হবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীর সংজ্ঞায় যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি, তাদের পাঁচ ক্যাটাগরি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে বা প্রবাসে অবস্থান করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপিত করা এবং মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করার প্রয়াসে সংগঠকের ভূমিকা পালন, বিশ্বজনমত গঠন, কূটনৈতিক সমর্থন অর্জন এবং মনস্তাত্ত্বিক শক্তি অর্জনের প্রেক্ষাপটে যেসব বাংলাদেশের নাগরিক প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করেছেন।

সহযোগী সংজ্ঞায় নির্ধারিত পাঁচ ক্যাটাগরি

• যেসব বাংলাদেশি পেশাজীবী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন এবং যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন

• যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) অধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা দূত এবং ওই সরকারের নিয়োগ করা চিকিৎসক, নার্স বা অন্যান্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন

• মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সঙ্গে সম্পৃক্ত সব এমএনএ বা এমপিএ, যারা পরে গণপরিষদের সদস্য গণ্য হয়েছিলেন

• স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সব বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top