দারিদ্রের শত বাধা পেরিয়ে

সফল হবার স্বপ্ন দেখে পথশিশু শ্যামলী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:৫২; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০১:১৩

শ্যামলী খাতুন (১৭)

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের কোর্ট স্টেশনসংলগ্ন ছোট একটি ঘনবসতি মহল্লা উত্তর মহিষবাথান। সেখানেই বসবাস পথশিশু শ্যামলী খাতুন (১৭)। সেই শ্যামলী এখন দারিদ্রের শত বাধা উপেক্ষা করে বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
শ্যামলীর পিতা মজিবুর রহমান (৪৮) এর নিজস্ব জমি-জমা বলতে কিছু নেই। রেলের মাটির উপরে কোন রকমে টাটির বেড়া দিয়ে একটিমাত্র কক্ষে বসবাস। শ্যামলীর বাবা মাদকাসক্ত রিক্সাচালক। বন্ধুদের সঙ্গে পড়ে ১৪-১৫ বছর যাবৎ মাদক সেবনের সাথে জড়িত। যার কারণে পরিবারের প্রতিও নেই কোন দায়-দ্বায়িত্ব। অসহায় শ্যামলী খাতুন অনাহারে, অর্ধাহারে থেকেছে দিনের পর দিন। সে সাথে পরিবারে অভাব, অনটন, অশান্তি নিত্য সঙ্গী।
এর মাঝে মা সুলেখা বেগম (৪১) বাসা বাড়িতে কাজ করে ৪ সদস্য পরিবারের হাল ধরেন। মাসিক সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে পরিবারের মুখে দ’মুঠো খাবার তুলে দেন। আবার মাদকসেবনের টাকার জন্য স্বামীর সাথে মারপিট-ঝগড়া ঝাঁটি প্রায়শ লেগেই থাকে। যার কারণে হতাশাগ্রস্থ শ্যামলীর পথে ঘুরেই কাটাত দিন।
২০১৩ সালে কারিতাস লাইফ প্রকল্প রাজশাহী জরিপের মাধ্যমে শ্যামলী খাতুনকে পথশিশু হিসেবে চিহ্নিত করে।
এ প্রকল্পের আওতায় তার পড়ালেখা শুরু হয়। একই সাথে পিতার বিভিন্ন সহায়তা পায়। বর্তমানে তার অদম্য ইচ্ছা শক্তির কারণে নানা চরাই উতরাই পার হয়ে ৩য় শ্রেণির গন্ডি পেরিয়ে বর্তমানে রাজশাহী শহরের বালাজাননেসা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। শ্যামলী খাতুন জানায় লেখাপড়া শিখে একজন ভাল সৎ পুলিশ অফিসার হবে। তার পরিবারের দুঃখ ঘুঁচাবে। পাশাপাশি ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া তার ছোট ভাই শামীম (১১) এর পড়াশোনা বিষয়েও ব্যাপক যন্তশীল।
সুলেখা বেগম বলেন, ‘কারিতাস লাইফ প্রকল্পের সহায়তা এবং আমার চেষ্টার আজ আমার মেয়ে এতদূর আসতে পেরেছে। আমি চাই সমাজে সে মাথা উচুঁ করে সম্মানের সাথে বেঁচে থাকুক।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top