মিয়ানমারে বেসামরিক সরকার ঘোষণা সূচীপন্থীদের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২১ ২১:০৮; আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৫
মিয়ানমারে চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামরিক বাহিনীর হাতে উৎখাত হওয়া আইনপ্রণেতারা বেসামরিক সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সামরিক নিপীড়ন এড়াতে আত্মগোপনে থাকা অং সান সু চির দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারা শনিবার (১২ মার্চ) সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। এনএলডির জ্যেষ্ঠ নেতা মান উইন খাইং থানকে ভারপ্রাপ্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ইতিমধ্যে তারা তাদের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ঘোষিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মান উইন খাইং থান ফেসবুকে দেশটির জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের জাতির সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্ত এবং এই সময়ের অবসান হতে আর বেশি দেরি নাই।
স্বঘোষিত বেসামরিক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কয়েক দশক ধরে আমাদের স্বৈরাচারের বিভিন্ন নিপীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই বিপ্লব আমাদের সব শক্তি ও সামর্থ্যকে ঐক্যবদ্ধ করার সুবর্ণ সুযোগ।
এদিকে শনিবার মিয়ানমারে সামরিক সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরও অন্তত ১২ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আরেক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মধ্যাঞ্চলীয় শহর পিয়ায়তে। বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুজন। এর আগের রাতে সেখানে আরও তিনজন নিহত হন।
মান্দালয়ভিত্তিক অ্যাক্টিভিস্ট মিয়াত থু নিহতদের মধ্যে ১৩ বছরের শিশুও রয়েছে। তিনি বলেন, তারা এমন আচরণ করছে যেন তারা নিরস্ত্র মানুষের সঙ্গে যুদ্ধে মেতেছে।
আরেক বিক্ষোভকারী দাবি করেছেন, এক বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ দুজনকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেছেন তিনি। বলেন, একজনের ঊরুতে গুলি লেগেছে, আরেকজনের নৃশংস মৃত্যু হয়েছে গুলিবিদ্ধ।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পিয়ায় শহরে নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে আহতদের নিতে দেয়নি। এতে করে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
মধ্যাঞ্চলীয় মাগওয়ে অঞ্চলের চৌক শহরে এক ট্রাকচালক বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার এক পারিবারিক বন্ধু।
বেসরকারি সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারজুড়ে সেনাবাহিনীর ক্ষমতাদখলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।
যেই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নেতারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন ঠিক সেই মুহুর্তেই সহিংসতার ঘটনা ঘটল। এ ছাড়া একই দিনে উৎখাত হওয়া ও স্বঘোষিত বেসামরিক সরকারের কোনো নেতা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বক্তব্য দিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির জাতীয় নির্বাচনে জয়ী এনএলডি দলকে সরকার গঠনের সুযোগ না দিয়ে দলটির সিনিয়র নেতাদের বন্দি করে সেনাবাহিনী। দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং এনএলডি নেত্রী সু চিকেও এদিন গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
- এসএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: