বগুড়ায় ব্যাংকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ, ক্যাশিয়ার গ্রেপ্তার
রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩৬; আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ০০:১৯
-2024-07-09-18-35-47.jpg)
বগুড়ার আদমদীঘি চাঁপাপুর বাজারের ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এজেন্ট ব্যাংক থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্যাশিয়ার সুজন রহমানকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে বগুড়া র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে র্যাব-১২ বগুড়া ও র্যাব-৪ সাভার যৌথ অভিযান চালিয়ে ঢাকার ধামরাই উপজেলার তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। সুজন বগুড়ার কাহালু উপজেলার এনামুল হকের ছেলে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে জুলাই মাসে উপজেলার চাঁপাপুর বাজারে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট চালু করেন গোবিন্দপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম সোহাগ। তিনি ছয়জন কর্মচারী নিয়ে প্রায় পাঁচ বছর ধরে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বর্তমান আউটলেটটির গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার। ওই আউটলেটে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা আর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জমা রাখা টাকার পরিমাণ বেশি ছিল।
চলতি বছরের ২৩ মে হঠাৎ ক্যাশিয়ার সুজন সপরিবারে নিরুদ্দেশ হন। এরপর ২৬ মে ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক সঞ্চয়ী হিসাব থেকে টাকা তুলতে এসে দেখেন তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা নেই। এতে সুজনের প্রতারণার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। পরে শতাধিক গ্রাহক টাকা ফেরত নিতে এসে দেখেন তাদের হিসাব নম্বরে জমাকৃত টাকা নেই। গত ২৮ মে এজেন্ট আউটলেটের স্বত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম তার আপন ভাতিজা ক্যাশিয়ার সুজন ও তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
এদিকে এজেন্ট নুরুল গ্রাহকের কাছে দায়বদ্ধ থাকলেও আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় গত ১১ জুন ইসলামী ব্যাংক পিএলসির দুপচাঁচিয়া শাখার ব্যবস্থাপক কাজী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে নুরুল ইসলামসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকে দুই মামলার সকল আসামি প্রায় দেড় মাস পলাতক রয়েছেন। গত ২৩ জুন গ্রাহকরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত ও আসামি গ্রেপ্তারের দাবিতে এজেন্ট আউটলেটের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন। ঘণ্টাখানেক পর চাঁপাপুর এজেন্ট আউটলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম আমানতকারীদের বুঝিয়ে তালা খুলে ফের কার্যক্রম শুরু করেন।
বগুড়া র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন জানান, র্যাবের যৌথ অভিযানে আদমদীঘির চাঁপাপুর ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, সুজনের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, হঠাৎ তার বড় চাচা নুরুল আর্থিক সংকটে পড়েন। এ কারণে তারা পরিকল্পনা করেন গ্রাহকের টাকা জমা নেওয়ার সময় রসিদ না দিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করবেন। সে অনুযায়ী টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা না করে নিজেরা ভাগ করে নিতেন। অপরদিকে গ্রাহকের একাধিকবার ফিংগারপ্রিন্ট নিয়ে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অধিক টাকা উত্তোলন করতেন। এভাবে এক বছর ধরে ধাপে ধাপে তারা প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্তী জানান, থানায় দায়েরকৃত পৃথক দুটি মামলার আসামিদের মধ্যে ক্যাশিয়ার সুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিষয়: বগুড়া
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: